দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ মার্চ: একমাত্র সন্তান। আদরে আহ্লাদে মানুষ! তাই, মায়ের সামান্য বকুনিও সহ্য করতে পারলো না উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ে। আত্মঘাতী হলো অভিমানিনী কন্যা! বুধবার সন্ধ্যায় এমনই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বেলদাতে। বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমির দ্বাদশ শ্রেণীর ওই ছাত্রীর নাম সোহানী জানা (১৮)। তার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে বেলদা থানার পুলিশ। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকে মুহ্যমান গোটা এলাকা থেকে সোহানীর বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় পরিজন সহ সকলে। একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে শোকে যেন পাথর হয়ে গেছেন বাবা-মা!

thebengalpost.net
সোহানী জানা :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আর মাত্র ১০ দিন পরেই (আগামী ২ এপ্রিল থেকে) উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। স্বাভাবিকভাবেই, এই সময় পড়াশোনায় একটুও ফাঁকি পছন্দ করেন না অভিভাবকরা! আর, পড়ায় ফাঁকি দিয়ে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে ঘোরাঘুরি কারণেই, বুধবার বিকেলে বকুনি দিয়েছিলেন মা। আর তাতেই কিশোরী কন্যা এই কান্ড ঘটিয়ে বসে! সোহানীর বাবা শিবনাথ জানা একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে বসে জানালেন, “ওর মা বকুনি দেওয়ার পর, এক চড় মেরেছিল। আর, তাতেই এই ঘটনা!” জানা গেছে, সন্ধ্যার ঠিক মুখে, বেলদা বাজার সংলগ্ন বাড়ির ঠিক কাছেই বন্ধু-বান্ধবদের সামনে মা বকাঝকা করে, গালে এক চড় মেরেছিলেন। তারপর সোহানী বাড়ি চলে যায়! ১০ মিনিট পরেই তার বেরিয়ে আসার কথা টিউশন পড়তে যাওয়ার জন্য। বন্ধুরা বাড়ির সামনেই অপেক্ষা করে। আধঘন্টা পরেও বাড়ি থেকে না বেরোনোয়, তার বাবা-মা সোহানী’র রুমের দরজায় ধাক্কা দেন। দরজা খুলে যেতেই ওপরের দিকে তাকিয়ে দেখেন, মেয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে! দ্রুত উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশেও। নিমেষের মধ্যে, ভরসন্ধ্যায় যেন শোকের অন্ধকার নেমে আসে এলাকায়! আর, এভাবেই সামান্য অভিমানের কারণে, আরও একটি অল্পবয়সী প্রাণ অচিরেই শেষ হয়ে গেল! অল্প বয়সীদের মধ্যে এভাবে মাত্রাতিরিক্ত হারে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ার জন্য আধুনিক জীবন যাপন, ছোট পরিবার, মোবাইল, সমাজ মাধ্যম আর লকডাউনের প্রভাবকেই দায়ী করছেন মনোবিদেরা।

thebengalpost.net
আত্মঘাতী কন্যা :