দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ এপ্রিল:ভয়, আতঙ্ক, অনুশোচনার আগুন নাকি পাপের প্রায়শ্চিত্ত? বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) ভোররাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের (ডেবরার বাড়াগড়ের) মেধাবী কন্যা স্পৃহা-কে খুন করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে পুলিশ তাকে খুঁজছিল। পেশায় রাজমিস্ত্রি, মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা সেই সর্বেশ্বর প্রামাণিকের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল তার বাড়ির অদূরেই! শুক্রবার বিকেলে, মুর্শিদাবাদ জেলার সুতি থানার বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সী ওই যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয় তার বাড়ি থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে। একটি পুকুর পাড়ের গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে বলে, সুতি থানা সূত্রে জানা গেছে। শুক্রবার রাতে এই খবর ডেবরা থানায় পৌঁছয়। এরপরই, ডেবরা থানা ও জেলা পুলিশের একটি দল সুতির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তদন্তের প্রয়োজনে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকালে নিজের রুম থেকে স্পৃহা চক্রবর্তী নামে ১৯ বছর বয়সী ওই ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানার বাড়াগড় এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী ডাক্তারি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ভাড়ায় থাকা এক রাজমিস্ত্রীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনে। সর্বেশ্বর প্রামাণিক নামে ওই রাজমিস্ত্রি ছাড়াও আরও তিন রাজমিস্ত্রি স্পৃহা-দের বাড়িতে ভাড়ায় ছিল গত ২ বছর ধরে। সম্প্রতি, ডেবরা বাজারে তাদের একটি দোকান ঘরের কাজও করছিল ওই মিস্ত্রিরা। তাদের মধ্যেই অন্যতম সর্বেশ্বর প্রামাণিক নামে বছর ২৬ এর ওই যুবক ভোররাতে স্পৃহা’র রুমে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। স্পৃহা বাধা দেওয়াতেই তাকে খুন করে পালিয়ে যায় বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। লিখিত অভিযোগের পর থেকেই তার খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। এদিকে, অভিযোগ হওয়ার মোটামুটি ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ভয়ে, আতঙ্কে কিংবা অনুশোচনার আগুনে দগ্ধ হয়ে সর্বেশ্বর আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, তদন্ত শেষ হওয়ার আগে, আত্মহত্যার মধ্য দিয়েই সর্বেশ্বর যেন বুঝিয়ে দিলো, স্পৃহাকে খুন সেই করেছে! অনেকেই বলছেন, প্রাণ দিয়ে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করলো হয়তো। কিন্তু, অকালে যে মেধাবী কন্যা পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল, তাকে তো আর ফিরে পাবেনা তার পরিবার! গতকাল (শুক্রবার) গলায় ফাঁস লাগিয়ে সর্বেশ্বর প্রামাণিক আত্মঘাতী হয় বলে সুতি থানার পুলিশ জানিয়েছে। যদিও, তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক আধিকারিক।
অপরদিকে, শনিবার মৃত ছাত্রীর বাড়িতে দেখা করতে গিয়েছিলেন ডেবরা বিধানসভার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ডঃ হুমায়ুন কবীর। এদিন নিহত যুবতীর বাড়িতে উপস্থিত হতেই মন্ত্রীর সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। এবিষয়ে মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর বলেন, “তদন্ত চলছে, আসল ঘটনা দু’দিনের মধ্যে পরিস্কার হয়ে যাবে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।”