মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ মে:শুধু ‘খেলো ইন্ডিয়া’ (Khelo India) নয়, এই প্রথম সর্বভারতীয় কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা ফুটবল দল। আর, সুযোগ পেয়েই, রাজ্যের প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের এই বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (Vidyasagar University)-ই ছিনিয়ে নিয়ে এল বিজয়ী’র শিরোপা। বেঙ্গালুরু (Bengaluru)-র জৈন বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jain University) অনুষ্ঠিত ‘খেলো ইন্ডিয়া- ২০২১’ (Khelo India University Games 2021) এর চ্যাম্পিয়ন (Champion) হল, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার (২ মে) সকালে আয়োজিত ফাইনাল ম্যাচে, পাঞ্জাবের গুরু নানক দেব বিশ্ববিদ্যালয় (Guru Nanak Dev University)-কে ২-০ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় বিদ্যাসাগরের বীরাঙ্গনারা! জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের ছাত্রীরা জগৎসভায় শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করায় শুধু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই নয়, উচ্ছ্বসিত আপামর মেদিনীপুরবাসীও।

thebengalpost.net
চ্যাম্পিয়ন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় :

প্রসঙ্গত, গত ২৪ এপ্রিল থেকে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার, দায়িত্ব পেয়েছে বেঙ্গালুরু’র জৈন বিশ্ববিদ্যালয়। ‘অল ইন্ডিয়া ইন্টার ইউনিভার্সিটি’ (All India Inter University) প্রতিযোগিতার ফলাফলের ভিত্তিতে দেশের ৮-টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মহিলা ফুটবল দল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিল। গত ২৮ এপ্রিল তামিলনাড়ুর আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয়-কে ৩-০ গোলে পরাজিত করে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় সেমি-ফাইনালে পৌঁছয়। এরপর, গত ৩০ এপ্রিল হরিয়ানার চৌধুরী বংশীলাল বিশ্ববিদ্যালয়-কে সেমি ফাইনালে পরাজিত করে (ট্রাইব্রেকারে) বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ফাইনালে মুখোমুখি হয় পাঞ্জাবের গুরু নানক দেব বিশ্ববিদ্যালয়ের। ফাইনালে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ২-০ গোলে পরাজিত করে পাঞ্জাবের এই বিশ্ববিদ্যালয়কে। ৪৮ মিনিটের মাথায় সিঙ্গো মুর্মু বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়-কে এগিয়ে দেয়। এরপর, ৭৩ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান বাড়ান মুগলী সরেন। সেমিফাইনালের পর ফাইনালেও দুর্দান্ত গোলকিপিং করেন রিঙ্কি ওঁরাও। অধিনায়িকা মুগলী হেমব্রম ফোনে জানান, “ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই জয়। জেলা ও রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করতে পেরে আমরা গর্বিত।”

thebengalpost.net
বিদ্যাসাগরের বীরাঙ্গনারা:

অপরদিকে, বীরাঙ্গনাদের এই কৃতিত্বে আবেগাপ্লুত উপাচার্য অধ্যাপক শিবাজী প্রতিম বসু জানিয়েছেন, “আমরা গর্বিত, উচ্ছ্বসিত- বললেও কম বলা হয়। প্রথমবার সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিল আমাদের মেয়েরা। চ্যাম্পিয়ন হয়ে শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা এই জেলা নয়, রাজ্যেরও মুখ উজ্জ্বল করেছে ওরা। কারণ, রাজ্যের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরা এখনও পর্যন্ত সর্বভারতীয় কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনাল অবধি পৌঁছতে পারেনি। সেখানে জঙ্গলমহল পশ্চিম মেদিনীপুরের মেয়েরা এক্কেবারে চ্যাম্পিয়ন! ওদের বরণ করে নেওয়ার অপেক্ষাতেই আছি।” উপাচার্য ড. বসু এও যোগ করেন, “বিজয়িনীদের বিশ্ববিদ্যালয় নানা ভাবে বর্ণোজ্জ্বল সংবর্ধনা প্রদান করবে। ৫ তারিখ ফেরার পরই কুচকাওয়াজ সহ বরণ করে নেওয়া হবে। পরের সপ্তাহে খোলা গাড়িতে করে মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন রাজপথে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে ঘোরানো হবে।” উপাচার্য এই অবিশ্বাস্য জয় মেদিনীপুরের সকল মৃত‍্যুঞ্জয়ী শহিদ ও স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অমর স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করেছেন।