দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩০ এপ্রিল: বাবা ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে (দশম শ্রেণীতে) অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্সের (Aerobic Gymnastics) জাতীয় স্তরে সোনা জয় করার পর পুলিশ-প্রশাসন, পৌরসভা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বণিক সভার সহায়তায় বিদেশে (থাইল্যান্ডে) পাড়ি দিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর শহরের মজিদা খাতুন। ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ সেলাই করা জুতো পরেই মজিদা জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় (Asian Aerobic Gymnastics Championship) ষষ্ঠ স্থান অর্জন করেছিলেন ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে। ফের জাতীয় স্তরে সোনা জয় করার পর, জাপানের বিশ্বকাপ এবং ভিয়েতনামের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে (Asian Aerobic Gymnastics Championship) অংশগ্রহণ করা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল রেলশহর খড়্গপুরের পুরাতনবাজারের বাসিন্দা মজিদা খাতুনের! এবার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিশকর্তা রানা মুখোপাধ্যায়। রানা খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে ছিলেন। নির্বাচনের আগে তাঁর বদলি হয়েছে বোলপুরে। তবে, খড়্গপুরের প্রতি ভালোবাসা ও কর্তব্যবোধ থেকেই মজিদা-র প্রতি আর্থিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানান পুলিশকর্তা রানা।
প্রসঙ্গত, জাপানে আগামী ২৫ এবং ২৬ মে হবে বিশ্বকাপ। তার পর ভিয়েতনামে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে নামার কথা খড়্গপুর শহরের সাউথ সাইড হাই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী মজিদার। এই দুই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বাংলা থেকে একমাত্র মজিদাই সুযোগ পেয়েছেন। তবে, আদৌ যেতে পারবেন কিনা, তা নিয়েই চরম দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাংলার এই মুহূর্তের এক নম্বর অ্যারোবিক জিমন্যাস্ট। মজিদার বাবা শেখ মজিদ দর্জির কাজ করতেন। তবে, লকডাউনের সময় কাজ হারিয়ে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেন খড়গপুর শহরে। কোনও রকমে চলে তাঁদের সংসার। মা রিনা বিবি গৃহবধূ। মজিদা এতদূর অবধি যেতে পেরেছেন তাঁর ‘প্রথম’ প্রশিক্ষক রঞ্জিত দাস চৌধুরীর উৎসাহ আর উদ্যোগেই। উল্লেখ্য যে, এখন মজিদার প্রশিক্ষক নৈহাটির সম্রাট পাল। তাঁর বাড়িতে থেকেই চলছে প্রশিক্ষণ। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালের পর, ২০২৩ সালেও জম্মু-কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত জাতীয় অ্যারোবিক জিমন্যাস্টিক্সে তিনটি বিভাগে সোনা জিতেছিলেন মজিদা। জাপান এবং ভিয়েতনামের প্রতিযোগিতায় নামতে মজিদা-র প্রয়োজন ছিল ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা!
এদিকে, এই টাকার ব্যবস্থা করা প্রায় অসম্ভব ছিল মজিদার চা বিক্রেতা বাবার পক্ষে। সমস্যার কথা শুনেছিলেন খড়্গপুরের ‘প্রাক্তন’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়। নির্বাচন শুরুর আগে তিনি বদলি হয়ে গিয়েছেন বোলপুরে। তবে, এই খবর পাওয়ার পরই মজিদার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন তিনি। ফোনে কথা বলেছেন মজিদার সঙ্গে। আশ্বাস দিয়েছেন প্রয়োজনীয় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যবস্থা করে দেওয়ার। মঙ্গলবার পুলিশ কর্তা জাপান এবং ভিয়েতনাম যাওয়ার বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বাকি টাকাও খুব দ্রুত ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। রানা জানিয়েছেন, ‘‘আমি চাই না অর্থের অভাবে প্রতিভা নষ্ট না হয়ে যাক। খড়্গপুরে ছিলাম দীর্ঘদিন। সমস্যার কথা জানতে পেরে কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলি। আমরা মজিদার সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, বিদেশ থেকে সোনা নিয়েই ফিরবে মজিদা।’’ উল্লেখ্য যে, ২০২২ সালেও যোগ্যতা অর্জনের পর মজিদা-র থাইল্যান্ড যাত্রা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। সেবার এগিয়ে এসেছিলেন তৎকালীন জেলাশাসক আয়েশা রানী, পশ্চিম মেদিনীপুর DCCI-র সাধারণ সম্পাদক চন্দন বসু, খড়্গপুরের প্রাক্তন পৌরপ্রধান প্রদীপ সরকার সহ মজিদার স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মজিদা বলেন, ‘‘আগে বাবা দর্জির কাজ করতেন। লকডাউনে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে সংসার চালাতে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করেন বাবা। পড়াশোনার পাশাপাশি নৈহাটিতে সম্রাট পালের কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করছি। জাপান এবং ভিয়েতনামে দেশের মোট পাঁচ জন যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আর্থিক সমস্যার জন্য আমার অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। এখন মনে হচ্ছে যেতে পারব! অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছি। সোনা জিতে ফিরতে চাই!”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…