দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ৩০ জুন: ‘অপরাজিত’ (Unbeaten) থেকেই বিশ্ব-জয় ‘অপরাজেয়’ ভারতের! বড় ম্যাচে বিরাটের রাজকীয় প্রত্যাবর্তন, বুমরার জাদু, হার্দিকের ম্যাজিক্যাল স্পেল আর সূর্যের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্যাচ- হাসি ফোটালো ১৪০ কোটি ভারতবাসীর মুখে। ‘বৃষ্টি’ হয়ে নেমে এলো বিশ্বজয়ের খুশি! ২০০৭-এ ধোনির (MS Dhoni) নেতৃত্বে প্রথম টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ জয়ের ১৭ বছর পর ফের ‘চ্যাম্পিয়ন’ হল ভারত (India)। মাঝখানে অবশ্য ধোনি’র নেতৃত্বেই ২০১১-র ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ (2011 Cricket World Cup Champion) জিতে ১৯৮৩ সালের পর ফের ‘জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন’ দখল করেছিল টিম-ইন্ডিয়া। তারপর থেকে আর কাপ আসেনি দুই ধরনের ফরম্যাটেই! এমনকি কোনও ICC ট্রফিই ঘরে আসেনি। অবশেষে ‘খরা’ কাটল বার্বাবোজে! ‘৭’ রানে (কাকতালীয় ভাবে ধোনির জার্সি-নম্বর) দক্ষিণ আফ্রিকা (South Africa)-কে পর্যদুস্ত করে রোহিত-বিরাট-হার্দিকদের দু’চোখ বেয়ে তাই নেমে এলো খুশির ‘বারিধারা’!

thebengalpost.net
চ্যাম্পিয়ন ভারত:

একসময় হাত থেকে প্রায় বেরিয়ে যাওয়া ম্যাচে রাজার মতো ফিরলো ভারত! গোটা বিশ্বকাপেই (T20 World Cup 2024) অপরাজেয়, অপরাজিত থেকেছেন রোহিত, বিরাট, বুমরা, অক্ষর, কুলদীপ, অর্শদীপ, হার্দিকরা। এদিন রোহিত ভালো শুরু করেও ফিরে যান মাত্র ৯ রান (৫ বলে) করে। রাজকীয় প্রত্যাবর্তন হয় কিং কোহলির! মূলত তাঁর ৫৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে ভর করেই ভারত ১৭৬ রান করে ৭ উইকেট হারিয়ে। ‘অলরাউন্ডার’ অক্ষর প্যাটেলের ৩১ বলে অনবদ্য ৪৭ রানও যে এদিনের বড় ম্যাচে বড় অবদান রেখেছে, তা বলাই বাহুল্য! বুমরা’র ‘ম্যাজিক’ অব্যাহত থেকেছে ফাইনালেও। ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ২ উইকেট। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ ১৬ এবং ১৮ ওভারে দিয়েছেন যথাক্রমে ৪ রান ও ২ রান (তুলে নিয়েছেন জেনসেনের উইকেট)। ১৭-তম ওভারে মাত্র ৪ রান খরচ করে ক্লাসের (H. Klassen) উইকেট তুলে নিয়ে অবশ্য নেলসন ম্যান্ডেলা (Nelson Mandela)-র দেশকে সবথেকে বড় আঘাতটা দিয়েছেন হার্দিক (Hardik Pandya)-ই। ১৯ তম ওভারে অর্শদীপ দিয়েছেন মাত্র ৬ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। উইকেটে ছিলেন ‘কিলার-মিলার’ (David Miller)। জয়ের ‘গন্ধ’ পেয়ে গেলেও, হার্দিকের প্রথম বলেই যে এতবড় ‘চমক’ অপেক্ষা করছিল, তা বোধহয় ১৪০ কোটি ভারতবাসী স্বপ্নেও ভাবেননি! মিলারের ‘আকাশছোঁয়া’ ক্যাচ অনবদ্য দক্ষতা আর ক্ষিপ্রতায় বাউন্ডারি লাইনে ‘তালুবন্দী’ করলেন সূর্য কুমার যাদব (SKY)। কেবল ‘ফাইনাল’ ম্যাচ নয়, ১৩ বছর পর ICC ট্রফিটাকেও হয়তো তখনই ‘তালুবন্দী’ করে ফেলেন ভারতের ‘দ্য স্কাই’! শেষ পর্যন্ত ফাইনাল ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা করে মাত্র ৮ রান। ৭ রানে জয়ী হয়ে টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত!

thebengalpost.net
রোহিত-বিরাট:

গোটা বিশ্বকাপ-জুড়ে বুমরা-ম্যাজিকে ব্যাটাররা ‘নাকানিচুবানি’ খাওয়ায়, তিনিই হয়েছেন প্লেয়ার অফ দ্য টুর্নামেন্ট (25.4 – 2 – 106 – 13 )। বিরাটের (Virat Kohli) ‘রাজকীয়’ ইনিংসের জন্য ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনিই। রাজার মতোই ম্যাচ শেষে কিং-কোহলি ঘোষণা করে দেন, “এটাই ছিল আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ড কাপ। এবার সময় এসেছে নতুনদের জায়গা করে দেওয়ার জন্য। ভালো লাগছে রোহিতের জন্যও। আমি ৬টা ওয়ার্ল্ড কাপ খেললেও, ও ৯টা ওয়ার্ল্ড কাপ খেললো! এই জয় (বিশ্ব-জয়) ওর প্রাপ্য ছিল।” আর, সাংবাদিক বৈঠকে ‘ক্যাপ্টেন’ রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)-ও জানিয়ে দিলেন, এটা তাঁর ক্যারিয়ারেরও শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল! শুধু ভারতবাসী নন, গোটা বিশ্বই তাই দুই কিংবদন্তীর জন্য একসুরে যেন গেয়ে ওঠেন, “দুর্গম পথ সগৌরবে/ তোমার চরণচিহ্ন লবে সগৌরবে/ চিত্তে অভয় বর্ম, তোমার বক্ষে তাহাই পরো….!” (প্রতিবেদন- মণিরাজ ঘোষ।)

thebengalpost.net
যশপ্রীত বুমরা:

thebengalpost.net
হার্দিক পান্ডিয়া: