দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ নভেম্বর: করোনার করাল গ্রাসে হারিয়ে গেছে কত প্রিয়জন! পশ্চিম মেদিনীপুরের এই স্কুলও হারিয়েছে তাঁদের প্রিয় দিদিমণিকে। স্কুল খোলার মাত্র ২২ দিন আগেই না ফেরার দেশে প্রিয় দিদিমণি! তাই, স্কুল খুললেও, মন খারাপ স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের নিশ্চিন্দীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে তাই স্কুল খোলার আনন্দের মাঝেই বিষাদের করুন সুর! ১৬ নভেম্বর স্কুল খুলেছে, ধীরে ধীরে সকলেই স্কুলে আসছেন। শুধু দেখা মেলেনি সবার প্রিয় মৌসুমী দিদিমণি’র। না, আর কোনও দিন তাঁর দেখা মিলবেও না! কারণ, তিনি তো পৌঁছে গিয়েছেন না ফেরার দেশে! সন্তান প্রসবের পর দীর্ঘ করোনা যুদ্ধে হার মেনেছেন দিদিমণি মৌসুমী শাসমল। অবশেষে গত অক্টোবর (২০২১) মাসের ২৫ তারিখে পাড়ি দিয়েছেন পরপারে!
দীর্ঘ ২০ মাস পর স্কুল খোলার আনন্দ চারিপাশে। তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এই নিশ্চিন্দীপুর হাই স্কুলে সেই আনন্দ অনেকটাই ম্লান! বিষাদের সুর ঘিরে আছে স্কুল প্রাঙ্গণকে। চোখে জল ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। মৌসুমী দিদিমণির কথা বলতে গিয়ে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকারা বলেন, “স্কুলে সবই আছে, তবুও যেন কিছু নেই! কী নেই বলে বোঝাতে পারবো না।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “আমাদের স্কুলের ভূগোলের শিক্ষিকা মৌসুমী শাসমল দিদিমণিকে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে কেড়ে নিয়েছে ‘করোনা’ নামক এই মারণ রোগ।” তিনি যোগ করেন, “এই ঘটনা খুবই বেদনার, দুঃখের! স্কুলের যে কোনও অনুষ্ঠানে তাঁর আন্তরিক অংশগ্রহন আমাদের আমাদেরকে বার বার মনে করাচ্ছে তাঁর কথা। শিক্ষিকা মৌসুমী শাসমল ছিলেন ছাত্র-শিক্ষক সকলের প্রিয়। তাঁর অকাল প্রয়াণ আমাদের মর্মাহত করেছে। তাঁর অভাব প্রতিমুহূর্তে আমরা অনুভব করছি।” স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী রুবেকা মাইতি, মনীষা বারিক, রহিত মণ্ডল’রা জানায়, “আমরা বন্ধু-বান্ধবরা সবাই স্কুলে এসেছি। কিন্তু, মৌসুমী দিদিমণি আসেননি। তিনি আর কোনও দিনই স্কুলে আসবেন না। এটা ভেবেই খুব খারাপ লাগছে। তিনি অত্যন্ত ভালো শিক্ষিকা ছিলেন। সকলকে ভালোবাসতেন, শাসন করতেন, ভালো পড়াতেনও। তাঁর মৃত্যুর খবর শুনেছিলাম। তখনও মন খারাপ হয়েছিল, কিন্তু স্কুলে আসার পর বেশি মন খারাপ লাগছে। দিদিমণির আত্মার চির শান্তি কামনা করছি, আমরা শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।”
স্কুলের আরেক শিক্ষক গুন্ধর বেরা বলেন, “গত সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ সন্তান প্রসবের জন্য ঘাটাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দিদিমণি। পুত্র সন্তানের জন্মও দিয়েছেন। ক’দিন পর শুনি দিদিমণি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ঘাটাল থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। শুনি আসতে আসতে অবস্থার অবনতি হয়। পরে শুনি করোনা নেগেটিভ হয়েছিল। গত ২৫ অক্টোবর দিদিমণির মৃত্যু হয়। কী মর্মান্তিক ঘটনা তা বলে বোঝানো যাবেনা। তিনি ছিলেন খুবই মিশুকে। সব সময় হাসি খুশি থাকতেন। সকলকে কাঁদিয়ে তিনি চলে গেলেন। প্রতিমুহূর্তে তাঁর অভাব অনুভব করছি।” কোরোনায় মৃত শিক্ষিকার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সহকর্মী মৌসুমী বেরা। তিনি বলেন, “স্টাফরুমে আমার পাশেই বসতেন ভূগোলের দিদিমণি। আমরা দুই মৌসুমী একসঙ্গে যাতায়াত করতাম। স্কুলের বাইরেও একটা অন্য সম্পর্ক ছিল। তাঁর শূন্যতা সবদিন অনুভব করবো। স্কুলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।”
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২২ নভেম্বর: আইআইটি (IIT)-র মতো বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানে অভাব…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ নভেম্বর: দোকান বন্ধ করে রাতেই বেরিয়েছিলেন বাইক নিয়ে।…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…