তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪ সেপ্টেম্বর: সময়ের ফেরে বদলে গেছে অনেক কিছুই। বদলাচ্ছে রীতি-নীতি, ইতিহাস-সংস্কৃতি! প্রতি মুহূর্তে বদলে যাচ্ছে পরিবেশ-পরিস্থিতি; মানুষের মন-মানসিকতা, চাওয়া-পাওয়া। রোজকার দুনিয়াতেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। আট থেকে আশির হাতে হাতে এখন মুঠোফোন (মোবাইল)। ইন্টারনেটের দৌলতে গোটা দুনিয়াও তাই হাতের মুঠোয়। স্বাভাবিকভাবেই টেলিভিশনও এখন অনেকখানি ব্রাত্য! আর, রেডিও? সে তো হয় আস্তাকুঁড়ে কিংবা ফেরিওয়ালার সঙ্গে অদলাবদলি করে জিনিসপত্র কেনা হয়ে গেছে! কিছু কিছু বাড়িতে যদিওবা আছে, তা অকেজো অবস্থায়! তবে, এই বোবা রেডিও’রই খোঁজ পড়ে, বছরের একটা সময়ে। বলাই বাহুল্য তা আসলে ‘মহালয়া’র ভোরে বীরেন্দ্র কন্ঠে চণ্ডীপাঠ শোনার জন্য! এই একটা জায়গায় বাঙালির আবেগ-ইচ্ছে সব মিলেমিশে একাকার। আর, তখনই খোঁজ পড়ে রেডিও’র ডাক্তারবাবুদের!

thebengalpost.net
রেডিও :

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালের বুদ্ধদেব পাল কিংবা চন্দ্রকোনার সঞ্জয় হাউসি’রা তাই এ ক’দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করলেন। ঘরে ঘরে অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকা বোবা যন্ত্রগুলির মুখে বুলি ফোটানোর জন্য দিনরাত কাজ করতে হল তাঁদের। দিন বদলের কারণে, এই সব রেডিও সারানোর কারিগর-ও কমে‌ আসছে। কারণ, এই যন্ত্রের কাজ করে যে পারিশ্রমিক মেলে, তার তুলনায় এলইডি টিভি, ফ্রিজ, এসি এই সমস্ত মেরামতির পারিশ্রমিক অনেক বেশি। তা সত্ত্বেও বুদ্ধদেব, শ্যামল, সঞ্জয়’রা পুরানো সেই অভ্যাস থেকে রেডিও মেরামত করেন। আর, এই ক’দিন চরম ব্যস্ততার সঙ্গে কাজ করে তাঁরা বীরেন্দ্র-প্রেমীদের হাতে তুলে দিলেন রেডিও। রাত পোহালেই তাতে বেজে উঠবে- “আশ্বিনের শারদ-প্রাতে বেজে উঠেছে আলোক-মঞ্জীর; ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা, প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত; জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা…..!!!”