দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ১৪ জুন: করোনা অতিমারীর ভয়াবহতা একবিংশ শতাব্দী’র আধুনিক বিশ্বকে স্তব্ধ-স্থবির-হতবাক করে দিয়েছে। স্বজন হারানোর হাহাকার আকাশে-বাতাসে! অনাথ হয়েছে শত সহস্র শিশু। জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন বা ন্যাশনাল কমিশন ফর চাইল্ড রাইটস (এনসিপিসিআর) সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে জানিয়েছে, ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২১ এর ৫ জুন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬২১ জন শিশু অনাথ হয়েছে। ২৬ হাজার ১৭৬ জন শিশু বাবা অথবা মা, দু’জনের এক জনকে হারিয়েছে। আর, ২৭৪ জন শিশুকে পরিবার ত্যাগ করে গিয়েছে! এদের মধ্যে ১৫ হাজার ৬২০ জন ছেলে। ১৪ হাজার ৪৪৭ জন মেয়ে। আর ৪ জন তৃতীয় লিঙ্গের। এই অনাথ শিশুদের একটা বড় অংশের বয়স ৮ থেকে ১৩ বছর। এই বয়সি শিশুর সংখ্যা ১১ হাজার ৮১৫। ৪ থেকে ৭ বছর বয়সি শিশুর সংখ্যা ৫ হাজার ১০৭। তবে, কমিশন এও জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে সব শিশুর বাবা, মা কোভিডে মারা যাননি। অধিকাংশ কারণ কোভিড হলেও, অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে অন্য কোনো কারণ! কমিশন জানিয়েছে, অনাথ বা অভিভাবকহীন মোট ৩০ হাজার ৭১টি শিশুর “যত্ন এবং সুরক্ষা” প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, এনসিপিসিআর এর বাল স্বরাজ পোর্টালে এই তথ্য দাখিল করেছে দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল। দ্য জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট,২০১৫-এর ধারা ২ এর ১৪ উপধারা অনুযায়ী এই শিশুরা সুরক্ষা পাওয়ার যোগ্য। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য সরকার এই শিশুদের শিক্ষা ও বেড়ে ওঠার দায়িত্ব নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর অনাথ শিশুদের জন্য একাধিক ঘোষণা করেছেন। পিএম কেয়ার্স ফান্ডের টাকা থেকে বাবা-মা হারা শিশুদের দেখভাল করার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ১৮ বছর বয়স হলে মাসিক অর্থ সাহায্য দেবে কেন্দ্র। ২৩ বছর বয়স হলে এককালীন ১০ লক্ষ টাকা করোনায় অনাথ শিশুর হাতে তুলে দেবে কেন্দ্র। ১৮ বছর পর্যন্ত আয়ুষ্মান ভারতের আওতায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা বিনামূল্যে পাবে শিশুরা। উচ্চশিক্ষার জন্য এডুকেশন লোনের মাসিক বা বার্ষিক কিস্তি মেটাবে পিএম কেয়ার্স ফান্ড। পড়াশোনার ব্যবস্থাও হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
(ছবিগুলি প্রতীকী ও সংগৃহীত)।