দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, সমীরণ ঘোষ, ৯ মার্চ:বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের তৃণমূলে যাওয়ার দিনই হাসপাতালে ভর্তি হলেন বিজেপি’র আরেক নেতা তথা খড়্গপুর সদরের বিধায়ক ও সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলর হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় ওরফে হিরণ। মঙ্গলবার সকালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার উডল্যান্ড নার্সিংহোমে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডিহাইড্রেশন (Dehydration) বা শরীরে জলের মাত্রা কমে যাওয়াতেই অসুস্থ হয়েছেন বিজেপি’র এই সেলিব্রেটি বিধায়ক। স্যালাইন, ওষুধ, ইঞ্জেকশনের পর মঙ্গলবার রাত্রি নাগাদ অনেকটাই স্থিতিশীল তিনি। তাঁকে দেখে গিয়েছেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি ড. সুকান্ত মজুমদার। সুকান্ত জানিয়েছেন, “খড়গপুর বিধানসভার বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্যায় হঠাৎ শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং কলকাতার উডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে ওনার সাথে হাসপাতালে দেখা করি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি উনি যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।” হিরণের জন্য প্রার্থনা করছেন, খড়্গপুরের অসংখ্য অনুরাগী, কর্মী, সমর্থকরা।
এদিকে, রাজনৈতিক মহল শুধু শারীরিক অসুস্থতা নয়, গত কয়েক মাসে হিরণের মানসিক চাপের বিষয়টিকেও তুলে ধরতে চাইছেন। মেদিনীপুর সাংসদ দিলীপ ঘোষের গড় বা খাসতালুক হিসেবে পরিচিত খড়্গপুরের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন হিরণ। প্রবল মমতা ঝড়েও খড়্গপুরের ডাকাবুকো শাসকদলের নেতা প্রদীপ সরকার-কে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন হিরণ। তারপর থেকেই বিভিন্ন কারণে দিলীপ ঘোষ ও তাঁর গোষ্ঠী’র নেতাদের সঙ্গে হিরণের দূরত্ব, মতভেদ ও অশান্তি তৈরি হয়। এনিয়ে একাধিকবার উত্তেজনার পরিস্থিতিও তৈরি হয়! এরপর, হিরণ তাঁর নিজের মতো করে রাজনীতি করেছেন খড়্গপুরে। অন্যদিকে, গত ৪ জানুয়ারি বিজেপি বিধায়কদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপও ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। তোপ দাগেন বঙ্গ বিজেপি’র বিরুদ্ধে! এত সবকিছুর পরও, দমে যাননি হিরণ। সকলকে চমকে দিয়ে খড়্গপুর পৌরসভায় লড়াই করার জন্য কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন। অন্যতম কঠিন সিটে (৩৩ নং ওয়ার্ডে) এলাকার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর ও জনপ্রিয় নেতা জহর পালের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন দাঁতে দাঁত চেপে। ভোটের দিন ‘খাওয়াদাওয়া’ ভুলে মাটি কামড়ে বুথে পড়েছিলেন হিরণ। ফলও পেয়েছেন হাতে নাতে! ১০৮ ভোটে ‘অপ্রতিদ্বন্দ্বী’ তৃণমূল প্রার্থী জহর পাল-কে পরাস্ত করেছেন। তারপরও শান্তি নেই! তাঁকে হারানোর জন্য ‘গদ্দারি’ করেছিলেন বিজেপি’র যে নেতা-কর্মীরা, তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছেন হিরণ। এমনকি, ফলাফলের পরদিনই ৩৩ নং ওয়ার্ডের দলীয় কার্যালয়ে ‘বিশ্বাসঘাতক’ চিহ্নিত করে চঞ্চল কর নামে এক বিজেপি কর্মীকে ব্যাপক মারধর করার অভিযোগও উঠেছে। আরও, অনেক ‘বিশ্বাসঘাতক’দের কল রেকর্ডও এসে পৌঁছেছে হিরণের হাতে। ৭ মার্চ বিধানসভা ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “শুধু বিরোধী দল নয়, বিভীষণদের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হচ্ছে।” ফলে, একদিকে শারীরিক লড়াই আর অন্যদিকে মানসিক অস্থিরতা- হিরণকে হয়তো অসুস্থ করেছে!
এর সঙ্গে আছে, শাসকদল তথা একসময়ের আপন ‘ঘর’ তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার হাতছানি! মঙ্গলবারই কলকাতার নজরুল মঞ্চে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার বাকি বিক্ষুব্ধদের রাস্তাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন। ফলে, আগামীদিনে লকেট চট্টোপাধ্যায়, সায়ন্তন বসু, রীতেশ তেওয়ারি, হিরণ চট্টোপাধ্যা- প্রমুখদের ‘পথ’ অনেকটাই নিষ্কন্টক হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে, লকেট-হিরণ’রা এখনই হয়তো তৃণমূলে যাওয়ার ঝুঁকি নিতে চাইছেন না! লোকসভার আগে অবধি আর একটু জল মেপে নিতে চাইছেন। ২৪-এ বিজেপির পক্ষে হাওয়া কতখানি থাকে কিংবা তৃণমূলের ‘টিকিট’ ও ‘জয়’ নিশ্চিত হচ্ছে কিনা, তা বুঝেশুনেই হয়তো সাংসদ লকেট বা বিধায়ক হিরণ-রা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন! তবে, দলীয় চিন্তন বৈঠকে লকেটের বিস্ফোরণ আর হিরণের অনুপস্থিতি, একদিকে যেমন রাজনৈতিক মহল-কে বিশেষ বার্তা দিয়েছে, ঠিক তেমনই বিধানসভা অধিবেশনে বিজেপি বিধায়ক-রা যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, সেই সময় হিরণের ‘জল খেতে’ বাইরে বেরিয়ে আসাও ‘বিশেষ ইঙ্গিত’ দিয়েছে! তাই, কে বলতে পারে ‘বিধায়ক’ পদ ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে খড়্গপুরের ‘চেয়ারম্যান’ হননি ঠিকই, আগামীদিনে যে লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুর আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে তৃণমূলের টিকিটে হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়-ই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না, এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই! আর, এই সমস্ত কিছু ‘চিন্তা’, ‘দুঃশ্চিন্তা’ আর কঠোর শারীরিক পরিশ্রম-ই হয়তো ‘সেলিব্রেটি বিধায়ক’ হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায়-কে সাময়িক ভাবে অসুস্থ করে তুলেছে, এমনটাই বলছে রাজনৈতিক মহল।
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: সাপ ধরে বাড়িতেই পরিচর্যা করতেন। এলাকাবাসীদের কথায়,…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসকদের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: সংগ্রাম, আন্দোলন কিংবা প্রতিবাদ। বরাবরই পথ দেখিয়ে…
শশাঙ্ক প্রধান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: বাড়ির ভিত তৈরির জন্য চলছিল খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। খোঁজ মিলল…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: ৫ এম.এল, ১০ এম.এল-র সিরিঞ্জ থেকে অ্যাড্রিনালিনের…
দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ নভেম্বর: এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নলেজ…