মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ মার্চ:”বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।” ‘বিদ্রোহী কবি’র এই বাণী অনন্তকালের এক চিরন্তন সত্য। দেবলোক রক্ষা’র পৌরাণিক কাহিনী থেকে মানবসভ্যতার বিকাশে অসামান্য অবদান- নারীর জয়গান সর্বত্র! ‘বিশ্বকবি’র সুরে এ যুগের ‘নারী মহীয়সী’রাও প্রতিমুহূর্তে গেয়ে চলেছেন- “আমার সুরে সুর বেঁধেছে জ্যোৎস্না-বীণায় নিদ্রাবিহীন শশী।” নারী দিবসের আবহে ঐতিহাসিক মেদিনীপুর শহরের নারী শক্তি ফের একবার সমাজগঠনে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখলেন। মেদিনীপুর শহরের অন্যতম সুপরিচিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘শালবীথি’ সম্পূর্ণভাবে প্রমীলা বাহিনী পরিচালিত সংগঠন। অতিমারীর সময় থেকে বিভিন্নভাবে এই সংগঠন মানব সেবায় নিয়োজিত। নারী দিবসের দু’দিন পর, গত ১০ মার্চ তাঁরা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের হাতে ১২ টি অক্সজেন কনসেনট্রেটর তুলে দেন। ‘শালবীথি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন’ এবং ‘মুক্তি’- এই দুই সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে জেলার মেদিনীপুর পৌরসভা, খড়গপুর পৌরসভা এবং ঘাটাল পৌরসভার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গ্ৰামীন এলাকার ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতেও অক্সিজেন কনসেনট্রেটর পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই দুই সংগঠনের এই মহতী প্রচেষ্টা। তাঁদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ভুবন চন্দ্র হাঁসদা। উপস্থিত ছিলেন, উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সিদ্ধার্থ দত্ত, মেদিনীপুর পৌরসভার বিদায়ী চেয়ারপারসন তথা কাউন্সিলর সৌমেন খান, সমাজসেবী সুব্রত সরকার, শালবীথি পরিবারের রীতা বেরা, দীপান্বিতা খান, অপর্না দাস, মধুছন্দা মাইতি, দেবলীনা চাটার্জী- প্রমুখ।

thebengalpost.net
অক্সিজেন কনসেনট্রেটর দান :

অন্যদিকে, মেদিনীপুর শহরের দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের শিশুদের শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে ‘বিনামূল্যের পাঠশালা’ খুলেছে আর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ‘এক ছোটিসি খোয়াইস’ নামে এই সংস্থাও মণীষা খটিক, মৌসুমী পাল, বিশাখা দে, রুমু দাস, সোমা দত্ত, অসীমা সেন-দের মতো একঝাঁক মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত। গত ১১ মার্চ তাঁদের অভিনব উদ্যোগে, মেদিনীপুর শহরের স্কুল বাজার তাম্বুলিপাড়া শীতলা মন্দির প্রাঙ্গণে উদ্বোধিত হল, এই বিনামূল্যের পাঠশালা। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সাড়ে পাঁচটা অবধি এই পাঠশালা চলবে। শুধু বাংলা-ইংরেজি-হিন্দি-গণিত-ইতিহাস-ভূগোল-বিজ্ঞান’ই নয়, এখানে শেখানো হবে অংকন, নৃত্য- প্রভৃতিও। পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলির ছেলেমেয়েদেরও সার্বিক বিকাশে এই উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন মণীষা। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলেও সংস্থার সদস্যরা জানিয়েছেন। আপাতত প্রায় ৪০ জন ছেলেমেয়েকে নিয়ে এই পাঠশালা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রথম দিন উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর রাহুল বিষই, সমাজসেবী কুমারদীপ খান- প্রমুখরা।

thebengalpost.net
পাঠশালা :