দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম, ২৩ জুন: আবারও মানবিক মুখ নিয়ে বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ালেন ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের নয়াবসান জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠে কর্মরত শিক্ষক হেরম্বনাথ চক্রবর্তী। বাঁকুড়া জেলার তালডাংরা থানার অন্তর্গত মাজুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ষষ্ঠী সর্দার। স্বামী, স্ত্রী এবং চার কন্যা নিয়ে পরিবারের সদস্য সংখ্যা ছয়। একমাত্র মেজো মেয়ে শর্বরী সর্দার,সুস্থ ও স্বাভাবিক। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। শম্পা, শিউলী এবং অপর্ণা নামে বাকি তিন কন্যাই শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধী। জন্ম থেকেই তারা এই বিরল রোগের শিকার! মাঝে মাঝে আপন মনেই তারা হাত-পা নেড়ে চলে। কিন্তু, মুখে মাছি বসলেও, সরিয়ে দেওয়ার মত সেই ক্ষমতাও তাদের নেই। জন্মের পর থেকে এভাবেই এই প্রতিবন্ধী মেয়েদের দিন কেটে যাচ্ছে। দিনমজুরির উপর ভিত্তি করেই দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী এই পরিবারটির জীবনযাত্রা অতিবাহিত হয়। বর্তমান করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাঁরা কর্মহীন। বর্তমানে তাঁরা কঠিন বাস্তবের সম্মুখীন!
চরম দুরবস্থার খবর পেয়ে পরিবারটির পাশে এসে দাঁড়ালেন বাঁকুড়ার কৃতি সন্তান এবং জঙ্গলমহল এলাকার মানবদরদী শিক্ষক হেরম্ব নাথ চক্রবর্তী। বুধবার হেরম্ব বাবু, মাজুরিয়া গ্রামের এই দুঃস্থ পরিবারটির বাড়িতে গিয়ে দশম শ্রেণীতে পাঠরত শর্বরী সর্দারের হাতে খাতা, কলম সহ বিভিন্ন পাঠ্য সহায়ক উপকরণ তুলে দেন। এছাড়াও ছাতু, দুধ, বিস্কুট, সোয়াবিন, হরলিকস সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য এবং করোনা প্রতিরোধকারী সাবান, মাস্ক সহ নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন দ্রব্য এবং নগদ কিছু অর্থ ষষ্ঠী বাবুর হাতে তুলে দেন এবং আগামী দিনেও তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। উল্লেখ্য, হেরম্ব বাবুর বাড়ি বাঁকুড়া জেলার তালডাংরা থানার হাড়মাসড়া গ্রামে। বর্তমানে, তিনি জঙ্গলমহল এলাকা হিসেবে পরিচিত ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত নয়াবসান জনকল্যান বিদ্যাপীঠ এর সংস্কৃত বিষয়ের শিক্ষক। শিক্ষা দানের পাশাপাশি বছর পর তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে রাখেন। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে হেরম্বনাথ বাবুর এহেন মানবিক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।