দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২৬ সেপ্টেম্বর: পুজোর আগেই আরও এক ঐতিহাসিক রায় দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকে ৩৯২৯ জনকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশ দিলেন তিনি। আরটিআই মামলা (RTI Case)’র পিটিশনার বা মামলাকারীদের মধ্য থেকে মেধা বা যোগ্যতা, কাস্ট বা ক্যাটাগরি’র ভিত্তিতে ৩৯২৯-টি শূন্যপদ পূরণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। প্রসঙ্গত, ২০১৪ প্রাইমারি টেট (Primary TET 2014) পাস দের মধ্য থেকে, ১৬ হাজার ৫০০ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল ২০২০ সালে ২৩ ডিসেম্বর। ২০২১ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল। যদিও, প্রশ্নভুল মামলার ভিত্তিতে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও চলছে! এদিকে, টেট পাস নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থী আলি হোসেন মণ্ডলের করা আরটিআই মামলার ভিত্তিতে জানা যায়, ১৬ হাজার ৫০০ নিয়োগের কথা বললেও; বাস্তবে পর্ষদ নিয়োগ করেছে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার (১২,৫৭১) জনকে। সেক্ষেত্রে ৩৯২৯ টি শূন্যপদে পর্ষদ নিয়োগ না করেই পরবর্তী নিয়োগে যাওয়ার কথা ভাবছিল! এই মামলাতেই পর্ষদের আইনজীবী সোমবার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি! ক্ষুব্ধ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পিটিশনার বা মামলাকারীদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে ৩৯২৯ জনকে নিয়োগ করার নির্দেশ জারি করেন। মামলাকারীদের সংখ্যা শূন্যপদের থেকেও বেশি বলেই তাঁদের ‘মেধা ও ক্যাটাগরি’ অনুযায়ী নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

thebengalpost.net
২০১৪ টেট পাসদের নিয়োগের নির্দেশ ৩৯২৯-টি শূন্যপদে :

জানা গেছে, মূল মামলা অর্থাৎ আলি হোসেন মণ্ডলের মামলায় ২৫২ জন পিটিশনার থাকলেও, পরবর্তী সময় একই দাবি নিয়ে আরও ৩৩-টি মামলা দায়ের হয়। সবমিলিয়ে নট ইনক্লুডেড (টেট পাস, প্রশিক্ষিত ও ইন্টারভিউ দেওয়া) পিটিশনার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার! তাঁদের মধ্য থেকেই ৩৯২৯ জনকে মেধা ও সঠিক ক্যাটাগরি অনুযায়ী নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই আন্দোলনরত নট ইনক্লুডেডদের মধ্য থেকে প্রায় ৪ হাজার জন চাকরি পেতে চলেছেন পুজোর পর-ই। সোমবার বিকেলে আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, “প্রাথমিকে পড়ে থাকা ৩৯২৯ টি শূন্যপদে পিটিশনারদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। এখনই সঠিক সংখ্যা বলতে না পারলেও, আনুমানিক পিটিশনার ৪ হাজারের কিছু বেশি।” তবে, এই পিটিশনারের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে নট ইনক্লুডেড প্রায় ৭-৮ হাজার চাকরিপ্রার্থীর মধ্যেই মেধার ভিত্তিতে ৩৯২৯ জনকে নিয়োগ করতে হবে পর্ষদকে। অন্যদিকে, আজ, সোমবারই প্রশ্নভুল মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের আগে ডি.এল.এড সম্পূর্ণ করা আরো ৬৫ জনকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। এর আগে, ১৮৭ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। ১৮৫ জন ইতিমধ্যে হাতে নিয়োগপত্র পেয়েও গেছেন। অপরদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর পরবর্তী টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেইমতো পর্ষদের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। এছাড়াও, প্রায় ১১ হাজার শূন্যপদ পূরণের জন্য পুজোর আগেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল জানিয়েছেন। এই প্রক্রিয়ায় ২০১৪ (নট ইনক্লুডেড) ও ২০১৭-এর টেট পাস প্রশিক্ষিতরা অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন তিনি।