দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ১৯ মে: ফের বিচারপতি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রায়ই বহাল থাকল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে। তবে, চাকরি বাতিলের রায়ে এবার সামান্য সংশোধন করে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সু্প্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গত ১২ মে, শুক্রবার ‘কমবেশি’ ৩২ হাজার (৩০,১৮৫) প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছিলেন। একইসঙ্গে, আগামী ৩১ আগস্টের (২০২৩) মধ্যে ২০১৪ টেট পাস (Primary TET 2014) সকল ‘অপ্রশিক্ষিত’ (সেই সময় অপ্রশিক্ষিত) চাকরিপ্রার্থীদের (১ লক্ষ ২৫ হাজার) নতুন করে ইন্টারভিউ নিয়ে প্যানেল বা মেধা তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। চাকরি পেয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া (এনসিটিই নির্ধারিত ২০১৯ সালের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে) ৩০,১৮৫ শিক্ষককেও ইন্টারভিউর মাধ্যমে যোগ্যতা প্রমাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ততদিন এই সমস্ত শিক্ষকেরা প্যারা টিচারদের মতো বেতন পাবেন বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। তারপর, যাঁরা চাকরি ফিরে পাবেন, তাঁদের বেতন সহ চাকরির ধারাবাহিকতা আগের মতই থাকবে অর্থাৎ কোনো ব্রেকিং ইন সার্ভিস হবেনা। কিন্তু, যাঁরা মেধা তালিকায় জায়গা পাবেন না, তাঁদের চাকরি পুরোপুরি বাতিল হবে!
সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিসিশন বেঞ্চে গিয়েছিল পর্ষদ এবং চাকরির ভবিষ্যৎ ‘অনিশ্চিত’ হয়ে পড়া শিক্ষকেরা। মঙ্গলবার ও বুধবার দীর্ঘ শুনানির পর, শুক্রবার সেই মামলার অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তালুকদার এবং বিচারপতি ভট্টাচার্য। তাঁদের নির্দেশ অনুযায়ী, ৩০ সেপ্টেম্বর বা পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত চাকরি যাচ্ছেনা ৩২ হাজার (৩০,১৮৫) শিক্ষক-শিক্ষিকার। অর্থাৎ, তাঁরা সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত আগের মতই বেতন পাবেন এবং স্থায়ী শিক্ষক হিসেবে সমস্ত সুযোগ সুবিধা ভোগ করবেন। কিন্তু, তাঁদেরকেও ইন্টারভিউ দিয়ে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board of Secondary Education)-কে ৩১ আগস্টের (২০২৩) মধ্যে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া বা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন দুই বিচারপতি। তারপর, সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। এমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সু্প্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ফলে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী, এই ৩০,১৮৫ শিক্ষকের বেতন এখন থেকেই প্যারা টিচারদের মতো হয়ে না গেলেও, ইন্টারভিউ দিয়ে তাঁদেরকেও নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করার নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। তবে, পর্ষদ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর, চাকরি বাতিল হওয়া শিক্ষকদের (যদি মেধাতালিকা অনুযায়ী কারুর চাকরি বাতিল হয়) কথা শুনবেন দুই বিচারপতি। অর্থাৎ, সেপ্টেম্বর মাসে পুনরায় মামলার শুনানি হবে। তারপরই, চাকরি বাতিল বিষয়ে চূড়ান্ত রায় দান করবে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।