দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ৬ সেপ্টেম্বর: পর্ষদের ভুলে টেট পাস করতে পারেননি! ৬ বছর পর প্রশ্নভুল মামলায় জয়ী হয়ে পাস করেছেন। এমনই বঞ্চিত ডি.এল.এড (D.EL.ED) প্রশিক্ষিত চাকরির প্রার্থীদের কাছে ‘ঈশ্বরের আশীর্বাদ’ হয়ে এসেছে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর), শিক্ষক দিবসের দিন তিনি ২৩ জন ২০১৪ টেট পাস ও ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের আগেই ডি এল এড প্রশিক্ষিত প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। আজ, মঙ্গলবার ফের এই ধরনের ৫৪ জন প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ-কে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, “পর্ষদের ভুলে এদের ৬ বছর নষ্ট হয়েছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সমস্ত চাকরির প্রার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করতে হবে।” এই ধরনের আরও বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী আছেন বলে জানা গেছে আইনজীবীদের মাধ্যমে। তাঁদের ক্ষেত্রেও বিচারপতি একই নির্দেশ দেবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই প্রশ্নভুল মামলায় জয়ী হয়ে বা সর্বাধিক ৬ নম্বর পেয়ে ২০১৪ টেট পাস করা এবং ২০১৬’র ২৬ সেপ্টেম্বরের আগে ডি.এল.এড সম্পূর্ণ করা এই ধরনের সকল প্রার্থীরা আইনজীবীদের মাধ্যমে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের শরণাপন্ন হতে চলেছেন বলেও আদালত সূত্রে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তর মাধ্যমে জনৈক সোহম রায় চৌধুরী সহ ২৩ জন চাকরিপ্রার্থী বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা করেছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেট পরীক্ষায় তাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। ২০১৫ সালে রেজাল্ট বেরোলে তাঁদের নট কোয়ালিফায়েড বা টেট ফেল হিসেবে গণ্য করা হয়। এরপর, ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বরের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পর্ষদ জানায়, টেট পাস এবং প্রশিক্ষিত (ডি.এল.এড পাস, সেই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বি.এড পাসদের প্রশিক্ষণ হীন হিসেবেই ধরা হয়েছিল) প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে নিয়োগ করা হবে। সেই অনুযায়ী, ২০১৭ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এরপরই, ওঠে প্রশ্নভুল মামলা। তার ভিত্তিতে ২০২১ সালের ২০ ডিসেম্বর তাঁদের নম্বর বাড়ে এবং তাঁরা টেট পাস হিসেবে বিবেচিত হন। তাই, তাঁদের দাবি ছিল, পর্ষদ ভুল না করলে, ২০১৫ সালেই তাঁরা টেট পাস হিসেবে বিবেচিত হতেন এবং ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই চাকরি পেয়ে যেতেন। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে বরিষ্ঠ আইনজীবী (Senior Advocate) বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এবং সুদীপ্ত দাশগুপ্ত’রা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Gangopadhyay) বেঞ্চে এই তথ্য তুলে ধরার পরই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সকল প্রশিক্ষিত ও টেট পাস চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করার নির্দেশ দেন। প্রয়োজনে অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি করে হলেও, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তাঁদের নিয়োগ করতে হবে বলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নির্দেশ দেন তিনি।