দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ২৪ ফেব্রুয়ারি: এ যেন বসন্তে হৈমন্তী-রহস্য! নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার কুন্তল ঘোষ এই ‘রহস্যময়ী’র নাম নেওয়ার পর গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) থেকেই মিডিয়ার ‘মাছের চোখ’ এখন হৈমন্তী। হৈমন্তী গাঙ্গুলি ( Haimanti Ganguly )। শুক্রবার সাত সকালেই তাঁর হাওড়ার বাকসাড়া রোডের বাড়িতে পৌঁছে যায় প্রায় সমস্ত মিডিয়া। এই ঠিকানাতেই থাকে হৈমন্তীর পরিবার । পরিবারে রয়েছেন হৈমন্তীর বাবা-মা এবং ছোট বোন। ১০-১৫ দিন আগেও নাকি এই বাড়ি এসেছিলেন হৈমন্তী; দাবি প্রতিবেশীদের। তবে, প্রথমে তা মানতে চাননি তাঁর মা! বরং তিনি মিডিয়ার এই ‘বাড়াবাড়িতে’ যারপর নাই ক্ষুব্ধ! পরে অবশ্য স্বীকার করেছেন, “বাড়ি লোকের অসুস্থতার খবর পেয়ে ১০-১২ দিন আগে বাড়িতে এসেছিলেন হৈমন্তী।”
তিনি এও জানান, ভালোবেসে নাকি গোপাল দলপতি-কে বিয়ে করেছিলেন হৈমন্তী! তবে, গোপালের এই ‘দ্বিতীয়’ বিয়ে নাকি টেকেনি বেশিদিন। ডিভোর্স হয়ে যায় বলে জানান তাঁর মা। তবে, গোপাল নাকি এই বাড়িতে আসেনি কোনোদিন। যদিও, তাঁর এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন প্রতিবেশীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ১০-১৫ দিন আগেও হৈমন্তী-কে দেখা গেছে। তবে, শেষবার তিনি পায়ে হেঁটেই বাড়ি এসেছিলেন তিনি। তার আগে বাড়িতে আসতেন বিলাসবহুল সব গাড়িতে করে। বাড়ির সামনে যখন তখনই নাকি এই সমস্ত গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতো। আসতেন গোপালও। হৈমন্তী অভিনয় আর মডেলিং করতেন বলে তাঁর পরিবারের লোক বলে বেড়াতেন বলেও দাবি এলাকাবাসীদের। এদিকে, কুন্তলের দাবি, গোপালের দ্বিতীয় স্ত্রী হৈমন্তীর কাছেই নাকি রয়েছে সব টাকা! তবে, সেই টাকা নিয়োগ দুর্নীতির কিনা, তা অবশ্য খোলসা করেননি। গোপাল-হৈমন্তীর রসায়নও প্রকাশ্যে এনেছেন তিনি। হৈমন্তীর কথাতেই নাকি নামও বদলে ছিলেন গোপাল দলপতি। নাম নিয়েছিলেন আরমান গঙ্গোপাধ্যায়। হৈমন্তীর নামে নাকি একটি কোম্পানিও খুলেছিলেন গোপাল। ডালহৌসী এলাকার একটি বিল্ডিংয়ের ৫ তলায় ৪১২ নম্বর রুমে হৈমন্তী অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কোম্পানির অফিস। যদিও, ওই অফিস বর্তমানে তালাবন্ধ! দরজার বাইরে একটি ফোন নম্বর দেওয়া। আর, সেই নম্বরে ফোন করলে, হিন্দি ও মারাঠি ভাষায় বলা হচ্ছে, এই নম্বরটি ইন-অ্যাক্টিভ রয়েছে। আশপাশের অফিসের কর্মীদের দাবি, হৈমন্তীর অফিসটি অনেকদিন ধরেই তালাবন্ধ। এদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের ২ নম্বর ব্লকের খিরিসবাড়ি গ্রামে আদিবাড়ি গোপাল দলপতির। গ্রামের বাড়িতে তাঁর মা লক্ষ্মী দলপতি একাই থাকেন। তিনি সম্প্রতি জানিয়েছেন, “এক ভদ্রলোক এসেছিলেন, বাড়ি সেই দমদমে। আমাকে বলেছিলেন, যে কোনওভাবে চিঠিটা যেন ছেলেকে পৌঁছে দিই। আমি বাবুকে (গোপাল দলপতি) ফোন করি, বাবু এসে চিঠিটা নিয়ে দুপুরে চলে যায়। তাও আবার এক সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। বাবু বলছিল, তাপস কুন্তল নিজেরাই আমাকে ডেকে টাকা পয়সা লেনদেন করেছে। কিন্তু আমি তো এক পয়সা নিইনি!”