দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পূর্ব মেদিনীপুর, ৬ আগস্ট: ৮ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিলেন গ্রুপ-ডি চাকরির জন্য। ২-১ জনের চাকরি হয়েছে। কয়েকজন ওয়েটিং লিস্টেই থেকে গেছেন। আর, বেশিরভাগেরই চাকরি হয়নি! যাঁদের চাকরি হয়নি, তাঁরা সেই ২০১৭ সাল থেকেই ওই দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা তথা তৎকালীন বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ’র বাড়িতে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকতেন, টাকা ফেরতের আশায়। কিন্তু, দিনের শেষে তিনি দেখা করতেন না! বরং, কখনও পোষা কুকুর লেলিয়ে দিতেন, কখনও আবার বাড়িতে নেই বলে বার্তা পাঠাতেন। অথচ, তিনি নাকি ঘরে এসি রুমে শুয়ে থাকতেন! অবশেষে, সুযোগ বুঝে শনিবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর এক নম্বর ব্লকের ওই প্রাক্তন বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ শিবশঙ্কর নায়েকের বাড়িতে হামলে পড়েন প্রায় ৮-১০ চাকরিপ্রার্থী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, এলাকার অনেকের থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন শিবশঙ্কর। ৮-১০ লক্ষ টাকা করে তুলেছিলেন তিনি। এখন চাকরি না হওয়ায় ওই টাকা ফেরত চেয়ে শনিবার তাঁর বাড়িতে হামলা চালায় উত্তেজিত জনতা। যদিও, বেগতিক বুঝেই পলাতক শিবশঙ্কর। তবে, তাঁর ছেলেকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা স্ত্রী-কেও চুলের মুঠি ধরে মারেন প্রতারিত মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ!

thebengalpost.net
গাছে বেঁধে মারধর:

উল্লেখ্য যে, শিবশঙ্কর ভগবানপুর এক নম্বর ব্লকের কোটবাড় গ্রামের বাসিন্দা। শনিবার সকালে শিবশঙ্করের খোঁজে তাঁর বাড়িতে যান এক দল চাকরিপ্রার্থী। তঁরা টাকা ফেরতের দাবি করেন। কিন্তু শিবশঙ্করের খোঁজ না পাওয়ায় তাঁরা ওই তৃণমূল নেতার ছেলে এবং স্ত্রীকে মারধর করেন। ছেলেকে গাছেও বেঁধে রাখা হয়। শিবশঙ্করের স্ত্রী মলিনা নায়েক বর্তমানে ভগবানপুর এক নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা। তিনিও এই টাকা নেওয়ার ঘটনায় জড়িত বলে চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ। ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দীপক মাইতি নামে এক যুবকের অভিযোগ, “ভাইকে গ্রুপ ডি পদে চাকরি করে দেওয়ার জন্য আমাদের থেকে আট লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন শিবশঙ্কর নায়েক। এর পর ২০১৭ সালে আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ার সময় উনি চাপে পড়ে দুই লক্ষ ফেরত দিয়েছিলেন। কিন্তু বাকি ছয় লক্ষ টাকা এখনও পাইনি। এর পর উনি আমাকে ঘুরিয়ে যাচ্ছেন। ওঁকে ফোন করলে খুনের হুমকি দেন। বাড়িতে এলে কুকুর লেলিয়ে দেন।” একই অভিযোগ অসীম গোল নামে এক অভিভাবকের। তাঁর বক্তব্য, “ছেলের জন্য ৮ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম।‌ চাকরি হয়নি। এখনও এক টাকাও ফেরত পাইনি!” এরকম অভিযোগ অন্তত ৮-১০ চাকরিপ্রার্থী বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের। এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন কাঁথি জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক তরুণ মাইতি। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “কেউ যদি টাকা তোলে, এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। আইনের পথে হেঁটে যা করার, তাঁর বিরুদ্ধে করুন। আমরাও তাঁর বিরুদ্ধে দলগতভাবে ব্যবস্থা নেব।” অন্যদিকে শুভেন্দু অধিকারী এই ঘটনার ভিডিও দিয়ে টুইট করেছেন, “খেলা শুরু!”

thebengalpost.net
স্ত্রী-কেও করা হয় মারধর: