দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, কলকাতা, ১০ সেপ্টেম্বর: শূন্যপদ চাওয়া হয়েছে বিভিন্ন জেলা থেকে। শূন্যপদের সংখ্যা এসে যাবে পুজোর আগেই। আনুমানিক শূন্যপদ ২০ হাজারের কিছু বেশি। কোর্টের নির্দেশ মেনে সেপ্টেম্বরের মধ্যে টেট (Primary TET) নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না! তবে, পুজোর পর-ই টেটের দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হবে শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে। তারপরই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।‌ ইতিমধ্যে, টেট পাস করে থাকা (২০১৪ ও ২০১৭’র টেট পাস চাকরিপ্রার্থীরা) প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবে। শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি (President) ড. গৌতম পাল সাংবাদিক বৈঠক থেকে মূলত এই বিষয়গুলিই তুলে ধরেছেন। তাঁর বক্তব্যের মূল নির্যাস হল, নিয়োগের তৎপরতা শুরু করা হয়েছে। সমস্ত বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে, পুজোর পর-ই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হবে আনুমানিক ২০-২২ হাজার শূন্যপদে। তবে, পুরোটাই ঢক্কা নিনাদ বা আষাঢ়ে গল্প কিনা, তা নিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে ইতিমধ্যে জল্পনা তৈরি হয়েছে। বিশেষত, ২০১৪ টেট পাস নট ইনক্লুডেড (টেট পাস, প্রশিক্ষিত ও ইন্টারভিউ দেওয়া) চাকরিপ্রার্থী একতা মঞ্চের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, আগে পুরানো নিয়োগের জটিলতা দূর করে, তাঁদের (নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের) নিয়োগ করুক পর্ষদ। তারপর নাহয় নতুন নিয়োগের ‘গল্প’ তৈরি করা হোক।

thebengalpost.net
ধর্না মঞ্চ থেকে দাবি উঠছে নিয়োগের:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সম্প্রতি মানিক-অপসারণের পর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ঢেলে সাজিয়েছে রাজ্য সরকার। নতুন পর্ষদ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কল্যানী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহ-উপাচার্য তথা পূর্ব মেদিনীপুরের ‘ভূমিপুত্র’ গৌতম পাল। দায়িত্ব নেওয়ার পরই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, “এবার থেকে প্রতিবছর টেট নেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ে টেট হবে। মেরিট লিস্ট বেরোবে। আমি কথা দিচ্ছি, কোনও অভিযোগ থাকবে না।” তারপরই, প্রথম বৈঠকে বসেন পর্ষদের নবগঠিত অ্যাডহক কমিটির সদস্যরা। সেই বৈঠকে পূজোর পর ফের প্রাথমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। পুজোর আগেই রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষকে শূন্য পদের তালিকা চলে আসবে। পুজোর পরই নিয়োগের বিজ্ঞাপ্তি জারি করবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এমনটাই জানানো হয়েছে। এদিকে, কলকাতার বুকে টানা ধর্না অবস্থানে বসে আছেন নট ইনক্লুডেড প্রায় ৭-৮ হাজার চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের ধর্না মঞ্চের তরফে, অচিন্ত্য সামন্ত, পারমিতা পাল, পীযুষ চ্যাটার্জি-রা দাবি জানিয়েছেন, “পুজোর আগে সকল নট ইনক্লুডেডদের আগে নিয়োগ করা হোক। মুখ্যমন্ত্রী আগে নিজের প্রতিশ্রুতি রাখুন। এই নিয়োগের জটিলতা দূর না করেই, নতুন টেটের, নতুন নিয়োগের গল্প দেওয়া হচ্ছে।” অন্যদিকে, আদালত সূত্রে জানা গেছে, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ২০১৪ প্রাইমারি টেট নিয়ে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে। ইতিমধ্যে শুনানিতে পর্ষদ জানিয়েছে, ৪ হাজার শূন্যপদে তাঁরা মামলাকারীদের (নট ইনক্লুডেডদের মধ্যে যাঁরা RTI মামলা করেছেন) নিয়োগ করবে। তবে, সেই নিয়োগ যে মেধার ভিত্তিতেই হবে তা বলাই বাহুল্য! যদিও, নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ৪ হাজার নয়, ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদের মধ্যে প্রায় ৬-৭ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ হয়নি! তাই, পর্ষদ ইচ্ছে করলেই অবশিষ্ট সেই শূন্যপদে সকল নট ইনক্লুডেডদের পুজোর আগে নিয়োগ দিতে পারে! শেষ পর্যন্ত কি হবে, তা হয়তো ২৬ সেপ্টেম্বরের শুনানির পর বোঝা যাবে! কারণ, চাপে না পড়লে, পর্ষদ বা শিক্ষা দপ্তর যে কখনোই ‘বাপ’ বলেনি বা নিয়োগ করেনি, তা অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছেন বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা।