দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ আগস্ট: প্রমোশানের সমস্ত গাইডলাইন উপেক্ষা করে রাতারাতি নিজের ভগিনীতিকে উচ্চ পদে নিয়োগ করার বা অনৈতিক ‘প্রোমোশন’ (Promotion) পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের (Paschim Medinipur DPSC) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা ডি.আই (প্রাথমিক) তরুণ সরকারের বিরুদ্ধে। যোগ্যদের বঞ্চিত করে নিজের আত্মীয় (ভগিনীপতি) রাধাকান্ত দেবনাথ-কে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের প্রধান সহায়ক (বড়বাবু) পদে বসানোর (নিয়োগ করার) অভিযোগ উঠলো তাঁর বিরুদ্ধে। ডিপিএসসি সূত্রে জানা গেছে, ৩১ জুলাই অবসর গ্রহণ করেছেন প্রাক্তন প্রধান সহায়ক পৃথ্বীশ রঞ্জন ঘোষ। ১ আগস্ট, সোমবার-ই নিজের ভগিনীপতি-কে ‘প্রোমোশন’ দিয়ে ওই পদে বসানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে, ২০০৭ সালের গাইডলাইন বা সরকারি বিধি উপেক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংসদের বাকি কর্মচারী তথা ঐক্যমঞ্চের সদস্যদের। প্রোমোশনাল কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে, যোগ্যদের আবেদনপত্র বিবেচনা করার পর এই ধরনের প্রমোশন দেওয়া হয় বলে তাঁদের মত। এক্ষেত্রে, নমিতা মাহাত, নলিনী জানা সহ অন্যান্য যোগ্যদের বঞ্চনা করে রাধাকান্ত দেবনাথ-কে পদে বসানো হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

thebengalpost.net
বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সংসদে :

এই অভিযোগ তুলে সোমবার দুপুরের পর বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের বর্ষীয়ান কর্মচারীরা। দলমত নির্বিশেষে ঐক্য মঞ্চ তৈরি করে প্রতিবাদ জানালেন এই অবৈধ ও অনৈতিক নিয়োগের বিরুদ্ধে। এমনকি, কর্মচারী ঐক্যমঞ্চের তরফে সঞ্জয় রায়, নমিতা মাহাতো, নমিতা জানা, চন্ডীচরণ ভট্টাচার্য, চঞ্চল কুমার জানা, তপন কুমার মাইতি, শিশির চক্রবর্তী, সৌরভ মুখার্জী, ছবি দলবেরা, বিকাশ দে প্রমুখ এই অনৈতিক নিয়োগের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত ও শিক্ষা) কুহুক ভূষণের কাছে স্মারকলিপি-ও জমা দিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২৪ জুন (২০২২) চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে কৃষ্ণেন্দু বিষই-কে। সরকারি নির্দেশিকা মেনে তারপরই দায়িত্ব (ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের) বুঝে নেন তরুণ সরকার। আর, দায়িত্ব নেওয়ার মাসখানেকের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠল। ডিপিএসসি’র অভিজ্ঞ কর্মচারী সঞ্জয় রায় জানিয়েছেন, “আমি আমার নিজের প্রোমোশনের উদাহরণ দিয়েই বলি, কিভাবে বাকিদের প্রোমোশন দেওয়া হয় আর এক্ষেত্রে কিভাবে দেওয়া হয়েছে! ১ জানুয়ারি ২০২২ আমার প্রোমোশন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তা হয়নি বিভিন্ন কারণে। ২০২২-এর ২২ জুলাই প্রোমোশনাল কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তারপর, ২৫ জুলাই থেকে আমি প্রোমোশন পেয়েছি। আর, এক্ষেত্রে কোনো বৈঠক নেই, আলোচনা নেই, যোগ্যদের উপেক্ষা করেই নিজের আত্মীয়কে রাতারাতি প্রোমশান দিয়ে এরকম উচ্চ পদে নিয়োগ করা হলো! এর বিরুদ্ধেই আমাদের প্রতিবাদ।” তবে, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে ডি.আই তথা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তরুণ সরকার জানিয়েছেন, “কোনরকম স্বজনপোষণ করা হয়নি। যোগ্য লোককেই উপযুক্ত পদে বসানো হয়েছে। আমি তো ২ বছর আগেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। তাহলে তো সেই সময়ই এই কাজ করতে পারতাম!” বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে চাপা উত্তেজনা রয়েছে ডিপিএসসি চত্বরে!