দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ নভেম্বর:পারিবারিক অশান্তির কারণে, দিনকয়েক আগেই ছেড়ে চলে গেছেন স্ত্রী। দেড় বছরের সন্তানকে নিয়ে প্রায় পাগলের মতো ঘোরাফেরা করছিলেন বছর ৩৫-৪০ এর যুবক। শুক্রবার সারা দিন ধরেই নাকি পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা বাজার সংলগ্ন এলাকায় ইতস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন ওই যুবক। কোলে ছিল দেড়-দু’ বছরের শিশু। শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ স্থানীয়দের নাকি বিভিন্ন বাসের সময়ও জিজ্ঞাসা করছিলেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ বেলদা থানার কেশিয়াড়ি মোড়ের লেভেল ক্রসিং সংলগ্ন রেললাইন থেকে শিশুর কান্না শুনতে পান স্থানীয়রা! অন্যদিক থেকে শোনা যায় ট্রেনের সাইরেন। দূরে দেখা যায় ট্রেনের লাইটও। স্থানীয় ক্লাবের একদল যুবক সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে গিয়ে শিশুটিকে লাইন থেকে উদ্ধার করেন। সরিয়ে নিয়ে আসেন যুবককেও। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পাশ হয় চলন্ত ট্রেন! শুক্রবার রাত্রি সাড়ে ৮টা-৯টা নাগাদ এভাবেই বড়সড় দুর্ঘটনা রুখে দেন স্থানীয়রা! এরপরই, বেলদা থানার পুলিশ এসে ওই যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

thebengalpost.net
যুবককে আটক করে নিয়ে যায় বেলদা থানার পুলিশ:

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খেটেখাওয়া, শ্রমিক শ্রেণীর ওই যুবকের নাম টোকন ঘোড়াই। বাড়ি কেশিয়াড়ি থানার সরিপুর এলাকায়। ঘটনার পর ওই যুবক স্থানীয়দের কাছে স্বীকার করেছেন, দিনকয়েক আগেই অশান্তির কারণে স্ত্রী ছেড়ে চলে গেছেন। স্থানীয়দের মতে, দেড় বছরের সন্তানকে নিয়ে তাই কি করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না যুবক! শুক্রবার দুপুর থেকেই, যুবক কিছুটা অসংলগ্ন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এলাকায়। সেই প্রেক্ষিতেই স্থানীয়দের অনুমান, হয়তো ওই যুবক সন্তানকে নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন কিংবা হুঁশ হারিয়ে ট্রেনের শব্দ শুনতেই পাননি! যদিও, যুবকের দাবি, ওই‌সব কিছু নয়, শিশুটিকে লাইনের উপর বসিয়ে তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে (মূত্রত্যাগ করতে) যাবেন ভাবছিলেন! স্ত্রী’র শোকে মুহ্যমান ছিলেন বলেই ওই লাইন দিয়ে ট্রেন আসার কথা চিন্তা করতেই পারেননি। বেলদা থানার পুলিশ অবশ্য ওই যুবককে তার সন্তান সহ আটক করে নিয়ে যায় থানায়। তবে, স্থানীয় যুবকদের তৎপরতায় যে এ যাত্রায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেলেন ওই যুবক ও তাঁর সন্তান, তা বলার অপেক্ষা রাখে না!