দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৮ মার্চ: এ এক মর্মান্তিক ঘটনা! সাক্ষী থাকলো পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানার কিয়াঝুরি গ্রামের সকল বাসিন্দা। বিশেষভাবে সক্ষম (physically challenged) নাতিকে রক্ষা করতে গিয়ে, বৃদ্ধ বাবার হাতে মৃত্যু হল ছেলের! শনিবার সকালের মর্মান্তিক এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে প্রত্যন্ত এই গ্রামে। জানা যায়, কিয়াঝুরি গ্রামের বাসিন্দা মৃন্ময় পরামানিক বাড়িতে তাঁর বিশেষভাবে সক্ষম (শারীরিক প্রতিবন্ধী) বছর ২১’র ছেলে রাজু পরামানিক-কে মারছিলেন। ছেলেকে বারবার নিষেধ করেও থামাতে পারছিলেন না মৃন্ময়ের বাবা অর্থাৎ রাজু’র দাদু গুইরাম পরামানিক। এরপর নাতিকে রক্ষা করতে গিয়ে ছেলের হাতে তাঁকেও মার খেতে হয়। এরপরই, আর সহ্য না করতে পেরে, রণমূর্তি ধারন করেন সত্তোরোর্ধ্ব গুইরাম। সামনে থাকা বাঁশ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করেন নিজের ছেলেকে। আর, তাতেই মাথায় আঘাত পান বছর চল্লিশের মৃন্ময়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে দ্রুত পৌঁছয় বেলদা থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি আহত রাজুকেও বেলদা হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁরা। বৃদ্ধ গুইরামকেও আটক করে নিয়ে যান থানায়। ঘটনা ঘিরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ওই পরিবার এবং এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মৃন্ময় মদ্যপ অবস্থায় প্রায়ই অশান্তি করত বাড়িতে। সংসারের দায়িত্ব নিজের মাথায় তুলে নিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী অর্থাৎ রাজুর মা কল্পনা পরামানিক। বাড়ি বাড়ি কাজ করে সংসার চালাতেন তিনি। এদিনও, সকালে তিনি কাজে গিয়েছিলেন। সেই সময়ই বাড়িতে অশান্তি শুরু করে মৃন্ময়। নিজের বিশেষভাবে সক্ষম ছেলেকেও বেধড়ক মারধর করে। চোখের সামনে তা সহ্য করতে পারেন না বৃদ্ধ গুইরাম (৭৫)। এরপরই, ঘটে যায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে ছুটে আসেন কল্পনা। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্বামীকে। হাতে বাঁশ নিয়ে ভাবলেশহীন অবস্থায় দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ শ্বশুর! বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো এই ঘটনায়, একপ্রকার সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন কল্পনা। এরপর, ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে নিজেদের কর্তব্য পালন করেন। ঘটনা ঘিরে এলাকায় নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া!