দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ মে: “শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের পাড়ায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। জাহের থান, ঢালাই রাস্তা, লাইট, ঘর, শৌচাগার- সমস্ত উন্নয়ন থেকে আকাশ্যা আদিবাসী পাড়াকে বঞ্চনা করা হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেদিনীপুর সফরের মাত্র তিন দিন আগে ফেসবুকে এমনই বিস্ফোরক পোস্ট করেছেন স্বয়ং শাসকদলের কর্মাধ্যক্ষ! আর, এনিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ঘটনাটি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর ২ নং পঞ্চায়েত সমিতির। ওই পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ বীরেন হাঁসদা এলাকার একটি সরু কাঁচা রাস্তার ছবি সহ শুক্রবার এমনই পোস্ট করেছিলেন নিজের সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্টে। তারপরই, বিতর্ক শুরু হয়ে যায় জেলাজুড়ে। ইতিমধ্যে, তাঁর ওই পোস্ট ভাইরালও হয়। দলীয় নেতৃত্বের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয় তাঁকে! তারপরই, শনিবার ক্যামেরার সামনে একপ্রকার চোখে জল নিয়ে বীরেন বললেন, “সত্যি কথা লিখেছিলাম। সেটাই আমার অপরাধ হয়ে গেছে!” যদিও, এখনও অবধি তিনি নিজের পোস্ট ডিলিট করেননি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খড়্গপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতির আদিবাসী অধ্যুষিত আকাশ্যা এলাকায় শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের নিজের বাড়ি। তাঁর অভিযোগ, গত চার বছরে (২০১৮ সালে জিতে আসার পর) এই এলাকায় তিনি কোনো উন্নয়ন পৌঁছে দিতে পারেন নি! জাহের থান, ঢালাই রাস্তা, শৌচাগার, নিকাশি ব্যবস্থা থেকে শুরু করে এলাকাবাসীর পাকা বাড়ি ও শৌচাগার- কিছুই হয়নি। এ নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত সমিতি থেকে শুরু করে বিডিও- সবার কাছেই দরবার করেছেন। কিন্তু, কেউই কোনো ভ্রুক্ষেপ করেননি! তাই, বাধ্য হয়ে এবার সমাজ মাধ্যমে পোস্ট করতে বাধ্য হয়েছেন বলে বীরেন জানিয়েছেন। যদিও, তা স্বীকার করেননি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সেখ আনিসুর রহমান। তাঁর মতে, “শুধু ওই এলাকা কেন, সর্বত্রই উন্নয়ন হয়েছে। রাস্তাঘাট, শৌচাগার সবকিছু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে সর্বত্র উন্নয়ন পৌঁছে গেছে। তবে, দু-একটি ক্ষেত্রে হয়তো দাবি থাকতে পারে। তা নিশ্চয়ই বিবেচনা করা হবে।” যদিও, চোখে জল নিয়ে বীরেনের দাবি, “আমিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। কিন্তু, এই এলাকায় উন্নয়ন হয়নি। যে আদিবাসী মানুষগুলি আমাকে বিশ্বাস করে ভোট দিয়েছেন, তাঁরাই এখন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, এতদিন কি করেছি! সত্যিই তো তাঁদের জন্য কিছুই করে উঠতে পারিনি। এখনও বলছি, আমার একটাই দাবি উন্নয়ন হোক।”