দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২ ডিসেম্বর: গোটা খড়্গপুর শহর যখন আবর্জনায় ঢেকে যাচ্ছে বলে শহরবাসী অভিযোগ তুলছেন, ঠিক তখনই দেখা গেল আবর্জনা তোলার জন্য পৌরসভায় আসা নতুন তিন চাকা ট্রলিগুলি পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে! জন্মাচ্ছে আগাছা। এ নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। একদিকে, শহরবাসী প্রতিমুহূর্তে অভিযোগ করছেন, গোটা শহরের যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ। ভ্যাট থেকে ছড়িয়ে পড়ছে নোংরা জিনিসপত্র। দূষণ আর দুর্গন্ধে ভরে যাচ্ছে শহর। অন্যদিকে, খড়্গপুর শহরের বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়ও বারবার অভিযোগ নিয়ে আসছেন খড়্গপুর পৌরসভার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি, তাঁকে ঝাঁটা হাতে নোংরা পরিস্কার করতেও দেখা গেছে খড়্গপুরে। আর, এর মধ্যেই খড়্গপুর পৌরসভার অন্তর্গত খড়গপুর সদর হসপিটাল লাগোয়া খড়্গপুর পৌরসভার জল ট্যাংকের পাশের একটি জায়গায় দেখা গেল প্রায় ১০০ টি তিনচাকার ট্রলি গাড়ি পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে রোদে-জলে-কুয়াশায়। ইতিমধ্যে, সেগুলিকে ঘিরে জন্মেছে আগাছা। চাকা গুলিতে মোরচে ধরেছে। ভ্রুক্ষেপ নেই কারুরই!
খড়্গপুর সদর বিজেপির বিধায়ক তথা অভিনেতা হিরণ্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, শয়ে শয়ে নতুন ট্রলি কিনে ফেলে রাখা হয়েছে। তার উপর এক মানুষের বেশি আগাছা জন্মে গেছে। জঞ্জালে ভর্তি হয়ে গেছে। সেই ট্রলি গুলো জঞ্জাল পরিষ্কার করার ট্রলি। কোটি কোটি টাকার টলি গুলো ফেলে রাখার জন্য তার উপর জঞ্জাল তৈরি হয়ে গেছে। অথচ খড়গপুর পৌরসভা এলাকায় জঞ্জাল পরিষ্কার করা হচ্ছে না। মানুষ ক্রমাগত বলছেন ডাস্টবিন নেই। কেউ আমাদের এখানে জঞ্জাল নিতে আসে না। অথচ তাদের জন্য ট্রলি কেনা হয়ে গেছে। টলির টেন্ডার হয়েছে। টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। ট্রলি গুলো কিনে এমন একটা জায়গায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ দেখতে পাবে না। মুখ্যমন্ত্রী কোটি কোটি টাকা খড়্গপুর পৌরসভাকে দিয়েছেন গত সাত বছরে। কিন্তু, যিনি চেয়ারপার্সন আছেন তিনি সাত বছরে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় করেছেন। খড়্গপুরের মানুষের জন্য কিছুই করেননি। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীদের দোষ দিই না! দোষ দিই যারা নিচু স্তরে কাজ করছেন। মানুষের সঙ্গে থেকে, মানুষের জন্য কাজ করার বদলে মানুষকে ঠকাচ্ছেন। মানুষকে গত সাত বছর ধরে ক্রমাগতভাবে ঠকিয়ে চলেছেন। খড়্গপুর শহরকে ঠকিয়ে নরকে পরিণত করেছেন!”
এনিয়ে, খড়্গপুর পৌরসভার অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন শতদল ব্যানার্জি বলেন, “ওখানে রাখার একটাই কারণ, পৌরসভার গোডাউনে শহরবাসীর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে নতুন বালতি এসেছে, তাতেই গোডাউন ভর্তি হয়ে আছে। সাময়িকভাবে আমরা ওখানে ট্রলিগুলো রেখেছি। ট্রলিগুলো ওখান থেকে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে আবর্জনা তোলার কাজে লাগানো হবে। অবিলম্বে সেই কাজ শুরু হবে। কিছু আগাছা হয়তো হয়েছে, ওগুলো পরিষ্কার করে দেওয়া হবে। স্যানিটারী ইন্সপেক্টর যাবেন। ওখানে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন। বিধায়ক তো বিরোধিতা করতেই ব্যস্ত! একজন বিধায়ক হিসেবে খড়্গপুরের উন্নয়নের দিকে কোন নজর নেই। পৌরসভা সমস্ত কো-অর্ডিনেটরদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে, সারা খড়্গপুরকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে একটা জায়গায় নিয়ে আসার জন্য। আর, উনি প্রতিবার আসেন এসে, ব্যাগড়া দিয়ে চলে যান। বিভিন্ন ধরনের বিতর্কিত কথাবার্তা বলেন। কাজের লোক বলে আমাদের মনে হয় না। ভদ্রলোক হলে সহযোগিতা করে হাত বাড়িয়ে দিয়ে উনি কাজ করতেন।”