তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ জানুয়ারি: নজরদারি কমিটি গড়ে দিয়ে ‘গঙ্গাসাগর মেলা’-তে অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে, ঝুঁকি নিতে রাজি নয় পশ্চিম মেদিনীপুর! তাই, বন্ধ করা হল ব্রিটিশ আমল থেকে হয়ে আসা শতাব্দী প্রাচীন ‘গঙ্গা মেলা’। ঘাটাল পৌরসভার পক্ষ থেকে ঘাটাল শহরের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার দিয়ে মেলায় আসা সমস্ত দোকানদার থেকে শুরু করে এলাকাবাসীকে নির্দেশ দেওয়া হল। প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল পৌরসভার ভাসাপোল সংলগ্ন শিলাবতী নদী লাগোয়া কুটিবাজার এলাকায় পৌষ সংক্রান্তির সকাল থেকে বসে গঙ্গা মেলা। আর এই মেলাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসতেন বহু মানুষ। এককথায় জনজোয়ারে পরিণত হতো এই দিনটি। শুধু তাই নয়, নৌকোতে করে নারকেল নিয়ে বিক্রি করতে আসতেন হাওড়া থেকে শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর, বিভিন্ন এলাকার মানুষজন। কিন্তু, মারাত্মক করোনা সংক্রমণের জেরে এই বৎসর ঘাটাল পৌর কর্তৃপক্ষ নির্দেশিকা জারি করেছে যে, গঙ্গা মাতার পুজো হলেও, এই বৎসর মেলা হবে না! আর এতেই মনভার মেলায় আসা ক্রেতা-বিক্রেতা থেকে শুরু করে সকলেরই। ঘাটাল পৌর প্রশাসক বিভাস চন্দ্র ঘোষ বলেন, “করোনা বিধি-নিষেধ মেনে, ছোটো করে গঙ্গা মাতার পুজো হবে। কিন্তু, মেলা হবে না!”
অন্যদিকে, করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের কারণে, ১৪ বছরের প্রাচীন মেলা বন্ধ করে ‘বিশ্ব করোনা মুক্তি’র জন্য হোমযজ্ঞ করলেন খড়্গপুর গ্রামীণের ‘মহাবীর মিলন মেলা উৎসব’ কমিটির সদস্যরা। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়্গপুর দু’নম্বর ব্লকের বসন্তপুরে মহাবীর মিলন মেলা উৎসব কমিটি প্রতিবছরের মতো এবছরও মেলা করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু, দিনের পর দিন তৃতীয় ঢেউ তথা ওমিক্রনের প্রভাব বাড়তে থাকায়, মেলা কমিটির সদস্যরা ১৪ বছরের প্রাচীন মেলা বন্ধ করে দিয়ে বিশ্ব শান্তি ও করোনা মুক্তির জন্য যজ্ঞের আয়োজন করলেন সোমবার। এদিকে, দাঁতন গ্রামীণ মেলা কমিটিও ঐতিহ্যমণ্ডিত এই ‘দাঁতন মেলা’ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি, মেলা কমিটির তরফে এই বিবৃতি জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে, এবার জেলাজুড়ে বন্ধ করা হয়েছে একাধিক পৌষ সংক্রান্তির মেলা। শালবনী ব্লকের কর্ণগড়ের শতাব্দী প্রাচীন পৌষ সংক্রান্তির মেলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহামায়া সেবা সমিতি। বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেশপুর থানার সুবিখ্যাত পঞ্চমী মেলাও।