thebengalpost.net
এসপি দীনেশ কুমার (SP Dinesh Kumar) :

মণিরাজ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৬ ফেব্রুয়ারি: “শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করাতে আমরা বদ্ধপরিকর। পুলিশ প্রশাসন প্রস্তুত আছে যেকোনো ধরনের অশান্তি রুখে দেওয়ার জন্য। দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্যে বলছি, কোনোরকম অপরাধ করার আগে দশবার ভাবুন।” শনিবার বিকেলে জেলা শহর মেদিনীপুরে দাঁড়িয়ে দুষ্কৃতীদের উদ্দেশ্যে এভাবেই কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন জেলা পুলিশ সুপার (Superintendent of Police/SP) দীনেশ কুমার। কোতোয়ালী থানার অধীন ধর্মা নাকা চেকিং পয়েন্ট পরিদর্শনে গিয়ে এসপি বললেন, “শুধু কোতোয়ালী থানার অধীনেই ৫-টি নাকা চেকিং পোস্ট করা হয়েছে। যাতে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা প্রবেশ করতে না পারে, সেই বিষয়ে পুলিশ তৎপর।” ইতিমধ্যে, জেলার প্রতিটি বুথে সশস্ত্র বন্দুকধারী এবং পুলিশকর্মীরা পৌঁছে গেছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন। জেলার ৭-টি পৌরসভার বাসিন্দাদের উদ্দেশ্যে নিশ্চিন্তে ‘নির্বাচনী উৎসব’ পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দীনেশ কুমারের বার্তা, “বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিশ্চিন্তে ভোট দান করুন। নিজের ভোট নিজে দিন। আপনার পাশে পুলিশ প্রশাসন সর্বদা আছে। কোন রকম সমস্যা দেখলেই, ডিস্ট্রিক্ট কন্ট্রোল রুমে ফোন করুন বা নিকটবর্তী অফিসারের সাথে যোগাযোগ করুন।”

thebengalpost.net
চলছে নাকা তল্লাশি:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৭-টি পৌরসভার ১২০-টি ওয়ার্ডের ৫৯৮-টি বুথে রবিবার সকাল ৭ টা থেকে বিকেল ৫ টা অবধি নির্বাচন। প্রতি বুথে থাকছেন চারজন ভোট কর্মী। প্রতি প্রিমিশেষে (ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে) থাকছে কমপক্ষে ২ জন বন্ধুকধারী বা সশস্ত্র পুলিশ। এক প্রিমিসেসে (ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে) দুটির বেশী বুথ থাকলে থাকছে ৪ জন বন্ধুকধারী। বুথ পিছু একজন করে ১ লাঠিধারী পুলিশ থাকছে। এছাড়াও, থাকছে সিভিক পুলিশরা। এস.পি দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, “প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের দায়িত্বে একজন করে ইন্সপেক্টর র‍্যাঙ্কের পুলিশ অফিসার থাকছেন এই প্রথম।” এছাড়াও, ১২ কোম্পানি র‍্যাফ থাকছে জরুরী পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। খড়্গপুর ও ঘাটালের জন্য আরও দুই কোম্পানি অতিরিক্ত র‍্যাফ থাকবে বলে জানা গেছে। জেলায় মোট ১৯-টি নাকা পয়েন্ট থাকছে। ভোটের আগে ২৪১ জন লাইসেন্সধারীদের কাছ থেকে বন্ধুক জমা নেওয়া হয়েছে নিরাপত্তার প্রয়োজনে।

thebengalpost.net
এসপি দীনেশ কুমার (SP Dinesh Kumar) :

এত সবকিছুর পরও, প্রতিটি বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অশান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে। হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে, জেলা কংগ্রেস সভাপতি সমীর রায় সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, “সক্রিয় কর্মী সমর্থকদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে শাসকদলের তরফে। এজেন্টদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মেদিনীপুর পৌরসভার ২, ২০, ২১ ও ২৫ নং পৌরসভার কংগ্রেস প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসার এবং মহাকুমা শাসকের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানিয়েছেন ইতিমধ্যে। এছাড়াও, ১৫ ও ১৭ নং ওয়ার্ড দুটিতেও আমরা অশান্তির আশঙ্কা করছি। সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।” অন্যদিকে, বামেদের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, ৪ নং সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি এবং বাইক মিছিল নিয়ে। অপরদিকে, শাসকদলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা জানিয়েছেন, “বিরোধীরা হারের ভয়ে এই সমস্ত অভিযোগ করছে! তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোথাও কোনো অশান্তির চেষ্টা হয়নি, হবে ও না। কারণ, উন্নয়নের নিরিখে নির্বাচন হবে। আর, মেদিনীপুর, খড়্গপুরের ৬০ টি ওয়ার্ড সহ জেলার সর্বত্র তৃণমূল কংগ্রেসের জয় জয়কার হবে। নির্বাচন অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ হবে বলেই আমরা আশা করছি। পুলিশ প্রশাসন তৎপর সমস্ত অশান্তি রুখে দেয়ার জন্য।” এদিকে, জেলা পুলিশের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনো অবধি কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায়নি। মেদিনীপুর পৌরসভা সহ জেলার কোথাও কোনো অশান্তির খবর নেই!