দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৫ এপ্রিল:খোদ কাউন্সিলরকেও ‘থোড়াই কেয়ার’ প্রোমোটারের! ফ্ল্যাট নির্মাণের জেরে বাড়ি ভাঙলো। রাস্তা ধসলো। অভিযোগ জানানো হলো, মহকুমাশাসক, জেলাশাসক থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও। তা সত্ত্বেও উঠছে আবাসন! ঘটনাটি, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শহর মেদিনীপুরের অভিজাত বিধাননগর এলাকার। প্রসঙ্গত, প্রোমোটার এবং অবৈধ জমি কারবারিদের দাপটে নাজেহাল হয়ে উঠেছে মেদিনীপুর শহর। মেদিনীপুর শহরে নিত্য নতুন ফ্ল্যাট নির্মাণ হচ্ছে প্রতিদিন। শহরের ২৫-টি ওয়ার্ড তো বটেই, শহর লাগোয়া অঞ্চলগুলোতেও ফ্ল্যাট নির্মাণ হচ্ছে বিদ্যুৎ গতিতে। পাশাপাশি, রাতের অন্ধকারে, বড় বড় যন্ত্রপাতি এনে চলছে এই প্রমোটিং এর কাজ। আর এই অবৈধ নির্মাণকে কেন্দ্র করেই সমস্যায় পড়েছেন বিধাননগরের কাউন্সিলর এবং ওয়ার্ডের এক বৃদ্ধা নাগরিক বা সিনিয়র সিটিজেন। তাঁরা এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে, পৌরপ্রধান, মহকুমাশাসক, জেলাশাসক থেকে শুরু করে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও চিঠি দিয়েছেন। তবুও, কাজ বন্ধ রাখেননি প্রোমোটার বিশ্বনাথ ঘোষ! উঠছে প্রশ্ন, কাউন্সিলরকেও তোয়াক্কা না করে, কার প্রশ্রয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি?
ঘটনাক্রমে বলা যায়, মেদিনীপুর পৌরসভার ২৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে অন্যতম এক অভিজাত ওয়ার্ড ৫ নং ওয়ার্ড অর্থাৎ বিধাননগর। যেখানে নবনির্বাচিত কাউন্সিলর মৌ রায়। বিগত, পৌর বোর্ডেও তিনিই ছিলেন এলাকার কাউন্সিলর। পুনরায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে মৌ রায় জানিয়েছেন, তাঁকে না জানিয়ে রাতারাতি অবৈধ নির্মাণ করছে বিশ্বনাথ ঘোষ নামে এক প্রোমোটার। যার ফলে এলাকার কংক্রিটের রাস্তা যেমন ধসে গেছে, তেমনি এই ফ্ল্যাট নির্মাণের ফলে আশেপাশে বাড়ি দুটি নড়বড়ে হয়ে ধসে পড়ছে। মায়া পালই নামে ৭০ বছর বয়সী বিধবা মহিলা যিনি, চিকিৎসার জন্য বাইরে ছিলেন, তিনি তিন মাস পর এসে দেখছেন, তাঁর বাড়ির পাঁচিল ভেঙে নিচে পড়ে গেছে! বাড়ি ধসে গিয়ে এক পাশে হেলে পড়েছে। যে কোনো সময় তা ভেঙে পড়তে পারে! ফলে বাড়ি ছেড়ে তিনি মিয়াবাজার এলাকায় তাঁর মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এই ঘটনায় ফ্ল্যাটের কাজ বন্ধের দাবি নিয়ে বারবার প্রশাসন ও পুরসভার কাছে আবেদন করেছেন বৃদ্ধা। কাকুতি মিনতি করে আবেদন করেছেন। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরেও চিঠি দিয়েছেন। জানা গেছে, পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান-ও এই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়ে গেছেন। তা সত্ত্বেও, রাতের অন্ধকারে যুদ্ধ কালীন তৎপরতায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রোমোটার। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন শাসকদলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরাও! স্বভাবতই, প্রশ্ন উঠছে এত সাহস ওই প্রোমোটার কোথা থেকে পাচ্ছেন? এনিয়ে, রীতিমতো ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী!