তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ এপ্রিল:মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘মা’ ক্যান্টিন মুখ থুবড়ে পড়লো পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাই পৌরসভায়। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। প্রসঙ্গত, দরিদ্র জনসাধারণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে শুরু করেছিলেন, তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প “মা ক্যান্টিন”। রাজ্যের বিভিন্ন শহরেই ধাপে ধাপে শুরু হয়েছে এই স্বল্পমূল্যের সরকারি ক্যান্টিন। ঢাকঢোল পিটিয়ে ঘাটাল মহকুমার ক্ষীরপাই পৌরসভাতেও মা ক্যান্টিনের উদ্বোধন করা হয়। পৌরসভা নির্বাচনের আগে, গত ২৮ ডিসেম্বর (২০২১), তা উদ্বোধন করেন মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস। ক্ষীরপাই পৌর এলাকার দরিদ্র সাধারণ মানুষকে ৫ টাকার বিনিময়ে ডিমের ঝোল, ভাত, তরকারি খাওয়ানোর উদ্দেশ্যেই মা ক্যান্টিনের সূচনা করা হয়েছে বলে প্রচারও করা হয়। অন্যান্য জায়গা থেকে যাঁরা কাজের তাগিদে আসবেন, তাঁরাও এই ক্যান্টিনের সুবিধা পাবেন বলেও জানানো হয়। প্রতিদিন ১৫০ জন মানুষ মাত্র ৫ টাকার বিনিময়ে এই খাবার পাবেন বলে আয়োজন করা হয়। তবে, তা চালু হওয়ার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ!

thebengalpost.net
উদ্বোধনের দিন:

জেলার অন্যান্য পৌরসভাগুলোতে মা ক্যান্টিনের পরিষেবা চালু থাকলেও, ক্ষীরপাই পৌরসভায় মাত্র সাত দিন চলে ‘মা ক্যান্টিন’। এমনটাই অভিযোগ। এই মুহূর্তে মা ক্যান্টিনের কোনো অস্তিত্বও ক্ষীরপাইতে নেই বলে সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন। বিরোধীদের বক্তব্য, ভোটের চমক দেওয়ার জন্যই এই ধরনের প্রকল্পগুলি নেওয়া হয়েছিল। বাস্তবে বেশিরভাগ জায়গাতেই মা ক্যান্টিনের পাঠ চুকে যাওয়ার পথে! বিজেপি নেতা কার্তিক সরেন বলেন, “ক্ষীরপাই পৌরসভা দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। মা ক্যান্টিনের জন্য সরকার টাকা দিয়েছিল। কিন্তু, লোকদেখানো দিন কয়েক চালিয়ে, সরকারি প্রকল্পের টাকা লুট করা হয়েছে। যেখানে প্রাইমারি স্কুলগুলো ছাত্র পিছু ৫ টাকারও কম পায়, মিড ডে মিলের জন্য; সেখানে এই প্রকল্পে সরকারের দেয় ১০ টাকা, উপভোক্তা ৫ টাকা। এছাড়াও, সরকার থেকে চাল, রাঁধুনির বেতন দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও কেন মা ক্যান্টিন বন্ধ হবে? তদন্ত করে দেখা হোক। আর, গরিব মানুষগুলো যাতে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য দ্রুত মা ক্যান্টিন খোলা হোক।” অন্যদিকে, সিপিএমের দাবি, এটা ছিল নির্বাচনের চমক। ইতিমধ্যে, অনেক দুর্নীতিও প্রকাশ পাচ্ছে মা ক্যান্টিন নিয়ে। এই বিষয়ে ক্ষীরপাই পৌরসভার চেয়ারম্যান দুর্গা শংকর পান বলেন, “আমি মাত্র কয়েকদিন দায়িত্ব নিয়েছি। যাতে সত্বর মা ক্যান্টিন খোলা যায়, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”