দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৭ মার্চ: জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় মাওবাদী পোস্টারের পর, এবার ল্যান্ডমাইন আতঙ্ক! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের রঞ্জার জঙ্গলে রাজ্য সড়ক সংলগ্ন একটি কালভার্টের তলায় বৃহস্পতিবার সাত সকালেই একটি ধাতব পাইপ ঘিরে আতঙ্ক ছড়ায়। ল্যান্ড মাইন সন্দেহে খবর দেওয়া হয় বোম্ব স্কোয়াড-কে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ওই রাজ্য সড়ক অর্থাৎ পিড়াকাটা-গোয়ালতোড় রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয় জেলা পুলিশের তরফে। এরপর, সিআইডি’র বোম্ব স্কোয়াড এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ওই ধাতব কন্টেইনারটি। তারপর, দুপুর বারোটা- সাড়ে বারোটা নাগাদ তা নিষ্ক্রিয় করা হয় বোম্ব স্কোয়াডের তরফে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা না হলেও, ঘটনা ঘিরে এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে ল্যান্ডমাইন আতঙ্ক!

thebengalpost.net
উদ্ধার হওয়া ধাতব মাইন বা ল্যান্ডমাইন :

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী, শালবনী ব্লকের রঞ্জার জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে যে পিড়াকাটা-গোয়ালতোড় পিচ রাস্তা চলে গিয়েছে, তার পাশেই একটি কালভার্টের তলায় একটি লোহার পাইপ কাটার অংশ দেখতে পান ওই এলাকার বাসিন্দারা। উল্লেখ্য যে, জঙ্গলমহল এলাকার মানুষ ল্যান্ড মাইন বিষয়ে যথেষ্ট পরিচিত! তাই, দৃশ্যমান ওই জিনিসটিকে ল্যান্ডমাইন এর মতো মনে হলে, তাঁরা নিকটবর্তী পিড়াকাটা ফাঁড়িতে খবর দেন। পুলিশ সেখানে গিয়ে দ্রুত জিনিটিকে দেখে ওই রাস্তায় যাতায়াত বন্ধ করে দেয় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। ঘটনাস্থলে হাজির হয় জেলা পুলিশের বিশাল বাহিনী এবং বোম্ব স্কোয়াড। পৌঁছয় ফায়ার ব্রিগেডের গাড়িও। এরপরই, সকাল ১১ টা নাগাদ পৌঁছয় বোম্ব স্কোয়াড। চরম তৎপরতা শুরু হয়। ঘন্টাখানেক পর সেটিকে সঠিক পদ্ধতি মেনে নিষ্ক্রিয় করে বাহিনী। এখনও, জেলা পুলিশের তরফে বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে, একসময়ের মাওবাদী অধ্যুষিত এই জঙ্গলে মাওবাদীদের এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটেছিল। বহু ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণ থেকে মানুষ খুনের ঘটনা ঘটেছে মাওবাদীদের হাতে। রঞ্জার জঙ্গল মাওবাদীদের একসময়ের পুরনো শক্ত ঘাঁটিও ছিল। ওই এলাকাটায় পুলিশ এনকাউন্টার করে ৬ জন মাওবাদীকে একসঙ্গে মেরেছিল। স্বভাবতই, ওই এলাকাতে এই ধাতব মাইনটিকে ঘিরে পুনরায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকার লোকজনদের মধ্যে।
*আপডেট: সন্ধ্যা নাগাদ জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, “কেউ বা কারা আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যে দুই দিক বন্ধ একটি ৫ কেজি ওজনের ধাতব কনটেনার রেখেছিল রঞ্জার ওই জঙ্গলে। পুলিশ ও বোম্ব স্কোয়াড তা নিষ্ক্রিয় করেছে। তবে, বিস্ফোরক জাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি! একটি নির্দিষ্ট মামলা রুজু করে, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো হচ্ছে।”