thebengalpost.net
জলে আলু :

তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৬ ডিসেম্বর: আরবি শব্দ ‘জাওয়াদ’ (Jawad) এর বাংলা মানে হল- উদার বা মহান বা দানশীল। তবে, সেই জাওয়াদ পশ্চিম মেদিনীপুরের চাষিদের ক্ষেত্রে ‘উদার’ হয়ে উঠতে পারলোনা! ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা পেলেও প্রবল বৃষ্টি ব্যাপক ক্ষতি করল চাষের। তিন-চারদিন আগে থেকেই চাষিদের সতর্ক করা হলেও, রক্ষা পেলেন না জেলার আলু ও ধান চাষিরা। জেলার এক কৃষি আধিকারিকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার কৃষকরা প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর আলু লাগিয়ে ফেলেছিলেন। তার প্রায় সবটাই জলের তলায়! অন্যদিকে, মাঠে থাকা প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর পাকা ধানেরও ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানা গেছে, সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ঘাটাল ও খড়্গপুর মহকুমায়। এরপর, মেদিনীপুর সদর। কৃষি আধিকারিক দুলাল দাস অধিকারী জানিয়েছেন, “তবে আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে ক্ষতির অঙ্কটা বোধগম্য হবে।” জেলা প্রশাসনের তরফে, কৃষকদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।

thebengalpost.net
দাসপুরে জলের তলায় আলুজমি :

এদিকে, টানা বৃষ্টির জেরে ঘাটাল মহকুমার চাষিরা প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে গেলেন বলে হতাশা প্রকাশ করেছেন! প্রসঙ্গত, সোমবার সকালেও ঘাটাল জুড়ে চলছে টানা বৃষ্টি। বিঘের পর বিঘে জমিতে জল আর জল! আলু থেকে ধান ফসল সর্বত্রই জলের তলায়। এমনিতেই ঘাটাল মহকুমায় টানা বৃষ্টির ফলে পাঁচবার বন্যা হয়েছে। চাষিরা অনেক কষ্টে কৃষি ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন। জাওয়াদের কবলে পড়ে চরম ক্ষতির মুখে চাষিরা। কৃষকদের দাবি প্রতি বিঘে পিছু আলু চাষে খরচ হয়েছিল ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা! আর সেই আলু লাগিয়েই, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রবল ক্ষতির সম্মুখীন হতে চলেছেন তাঁরা। এমনিতেই, কৃষিপ্রধান এই এলাকায়, শীতের শুরুতেই আলু, মুলো, পেঁয়াজ, শসা, বেগুন অর্থাৎ শীতের যাবতীয় সবজি চাষ করেছিলেন কৃষকরা। সবটাই প্রায় জলের তলায়! এক চাষি আক্ষেপ করে বললেন, “জল থৈ থৈ জমি যেন পুকুরে পরিণত হয়েছে। কি হবে কে জানে”! ফলে একপ্রকার নিঃস্ব হতে চলেছেন বলে দাবি তাঁদের। কয়েকদিনের মধ্যেই ক্ষতির পরিমাণ হিসেব নিকেশ করে যথাসাধ্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রশাসন সূত্রে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

thebengalpost.net
ঘাটাল মহকুমায় জলের তলায় ধান :