দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৮ সেপ্টেম্বর: বউমা খুব রাগী। তা বলে, সরাসরি বৃদ্ধ শ্বশুরের অন্ডকোষে এমন গুরুতর আঘাত হানবেন, ভাবতে পারেননি কেউই! আক্ষেপ করে স্বামী বলেন, “আমার গোটা শরীরে ওর নখের দাগ। প্রচণ্ড রগচটা ও। মনে হয় মানসিক কোনও সমস্যা রয়েছে!” আপাততো রগচটা বউ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। স্বামী বলেন, “আমার সন্তান রয়েছে। কিন্তু, আমার বাবাও খুব কষ্ট পেয়েছেন। এর আগে কোনওদিন ওর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করিনি। তবে, এবার চাই ও শাস্তি পাক।” ঘটনার সূত্রপাত, সামান্য বাপের বাড়ি যাওয়াকে কেন্দ্র করে! গত শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর), পূর্ব মেদিনীপুরের নারকেলদাহা গ্রামে বাসিন্দা বিশ্বজিত হাইতের কাছে তাঁর স্ত্রী শিখা আবদার করেছিলেন মাংস খাওয়ার জন্য তিনি বাপের বাড়ি যেতে চান। কিন্তু, স্ত্রী’র প্রতি আদর আর অধিকার দেখিয়ে স্বামী জানান, বাড়িতেই মাংস রান্নার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন তিনি! বাজার থেকে এক্ষুনি মাংস এনে দেবেন বলেও জানান। কিন্তু, এই সামান্য ঘটনাতেই রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে যান শিখা! চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে ঝগড়া শুরু করে দেন এবং অকথা-কুকথা বলতে থাকেন। এরপরই, ৭৫ বছর বয়সী শ্বশুর মশাই বউমা-কে আটকাতে যান। তাতেই আরও রেগে গিয়ে, শ্বশুরের অন্ডকোষে টান মারেন শিখা! স্পর্শকাতর ওই জায়গা ছিঁড়ে গিয়ে রক্তাক্ত হয় বলে অভিযোগ। যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন প্রৌঢ়! চিকিৎসার পর এই মুহূর্তে কিছুটা স্থিতিশীল আছেন তিনি। ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন শিখা হাইত। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে!

thebengalpost.net
বউমা ও শ্বশুর:

মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে পৌঁছেছেন আহত ওই শ্বশুর মশাই। খাটের উপর, মাদুরে শুয়ে বছর ৭৫-এর প্রবীণ হাপুস নয়নে কেঁদে চলেছেন! ‘বউমার দেওয়া আঘাতে’ শরীরের নিম্নাঙ্গে পরতে পারছেন না কোনও পোশাক। আতঙ্কে মাঝে মধ্যেই ভুল বকছেন! অণ্ডকোষে ‘চরম আঘাত’ করার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন বউমা। এদিকে, স্বামী বিশ্বজিৎ এই ঘটনায় যেন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, এর আগেও ইঁট দিয়ে তাঁর বাবাকে মারতে গিয়েছিলেন শিখা। তাঁর মাথায় বসিয়েছিলেন বটির কোপ। বিষয়টি শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বারবার জানিয়েছিলেন তিনি। আর্তি জানিয়েছিলেন মেয়েকে বোঝাতে। কিন্তু, তাঁরা কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে আক্ষেপ বিশ্বজিতের। তিনি বলেন, “আজ ১৩-১৪ বছরের সংসার আমাদের। ছেলে-মেয়েরা বড় হয়ে গিয়েছে। ওর গ্রেফতারের পর খারাপ লাগছে। কিন্তু, রাগলে যে ওর কী হয়! আমার গোটা শরীরে ওর নখের দাগ। প্রচণ্ড রগচটা ও। মনে হয় মানসিক কোনও সমস্যা রয়েছে । বিষয়টি নিয়ে শিখার পরিবারের সঙ্গে আগেও কথা বলেছি। তারা মেয়েকে বোঝানোর জায়গায়, ওকে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। ওদের পরিবার শিক্ষিত। তা সত্ত্বেও কেন যে এরকম করে!”