দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২০ জুলাই: বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দাম তো আছেই; তার সঙ্গে একই বাজারেই আবার ভিন্ন ভিন্ন দাম! শনিবার (২০ জুলাই) সকালে মেদিনীপুর শহরের বিভিন্ন সবজি বাজারে হানা দিয়ে এমনই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন জেলা প্রশাসন এবং DEB-র আধিকারিকরা। উল্লেখ্য যে, সবজি সহ আলু-পেঁয়াজ-আদা-রসুনের লাগামছাড়া ‘মূল্যবৃদ্ধি’ প্রতিরোধে শনিবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী-র নির্দেশে জেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের ‘যৌথ টিম’ একাধিক দলে ভাগ হয়ে জেলা শহর মেদিনীপুরের বিভিন্ন বাজারে হানা দিলেন। আর বাজারে হানা দিয়েই নানা অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হল অভিযানকারী দলের সদস্য তথা আধিকারিকদের।

thebengalpost.net
আলু-পেঁয়াজের দোকানে প্রশাসনের অভিযান:

মেদিনীপুর শহরের রাজাবাজার, স্কুলবাজার, গেটবাজার, কোতোয়ালীবাজার সহ বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা দেখেন, আলু রাজাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা প্রতি কেজিতে। আবার গেটবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩২-৩৫ টাকা প্রতি কেজিতে! আবার স্কুলবাজারে এর দাম ৩০ থেকে ৩২ টাকা প্রতি কেজি। পেঁয়াজ কোথাও ৪০ টাকা প্রতি কেজি, কোথাও আবার ৪২ কিংবা ৪৫। স্কুলবাজারের কোনও দোকানে আদা ২০০ টাকা প্রতি কেজি, কোনও দোকানে আবার ২২০টাকা প্রতি কেজি। রসুনের ক্ষেত্রে ওই একই বাজারে দাম ঘোরাফেরা করছে ২৫০ থেকে ৩০০টাকা প্রতি কেজি। লেবু কেউ নিচ্ছেন ১-পিসের দাম ৩-টাকা, কেউ আবার বিক্রি করছেন ৫-টাকা করে। ফুলকপি কোথাও পিস প্রতি ৩০, কোথাও আবার ৪০ থেকে ৫০। দামের এই হেরফেরের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কড়া ধমক দিলেন আধিকারিকরা। আলু-পেঁয়াজ-আদা-রসুন সহ বিভিন্ন সবজির সঠিক দাম কত হওয়া উচিত তাও জানিয়ে দিলেন। কি কারণে দামের এই হেরফের, তাও খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চান পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। কথা বলেন ক্রেতাদের সঙ্গেও। বেশিরভাগ ব্যবসায়ীরাই জানালেন, তাঁরা পাইকার বা আড়ৎদার বা ফড়েদের কাছ থেকে যেমন দামে কেনেন, সেই ভাবেই বিক্রি করেন! অপরদিকে, গ্রামগঞ্জের কৃষকদের দাবি তাঁদের কাছ থেকে ন্যূনতম দামে সবজি কেনেন পাইকার কিংবা ফড়েরা। তারপরই অতিরিক্ত মুনাফার জন্য, বে-হিসেবিভাবে দাম বাড়ানো হয়।

thebengalpost.net
দামে হেরফের নিয়ে হুঁশিয়ারি:

তাই, সবজি বা আলু-পেঁয়াজের দামের এত বেশি হেরফের হওয়া উচিত নয় বলেই জানান জেলা প্রশাসনের অভিযানকারী দলের সদস্যরা। এই বিষয়ে ব্যবসায়ীদের কড়া হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়। জানানো হয়, আলুর দাম প্রতি কেজি ৩০ (জ্যোতি আলু) টাকার বেশি কোনোভাবেই নেওয়া যাবেনা। পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ৪০-টাকা প্রতি কেজি দাম নিতে হবে। আদা ও রসুনের দাম প্রতি কেজিতে যথাক্রমে ২০০ ও ২৬০-টাকার বেশি নেওয়া যাবেনা বলেও জেলা প্রশাসনের অভিযানকারী দলের নির্দেশ। আধিকারিকদের তরফে দাবি করা হয়েছে, মেদিনীপুর শহরের রাজাবাজার ও মির্জাবাজারে জিনিসপত্রের দাম তুলনামূলকভাবে একটু কম। এই ধরনের অভিযান ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে দামের মধ্যে একটা সমন্বয় আনাই তাঁদের লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন। মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দারা জানান, “বাজার গেলেই পকেট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। সবজির সঙ্গে সঙ্গে আলু-পেঁয়াজ-আদা-রসুনের দামও লাগামছাড়া! অথচ, বর্ষাকালে জিনিসপত্রের দাম কম হওয়া উচিত। তবে, জেলা প্রশাসনের তরফে ধারাবাহিকভাবে এই ধরনের অভিযান চালালে কিছুটা হলেও মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব। এখন মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে দু’দিনের জন্য অভিযান হচ্ছে, তারপর তো আবার যে-কে-সেই!

thebengalpost.net
মেদিনীপুর শহরের স্কুলবাজারে অভিযান: