দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৩ সেপ্টেম্বর: চাকরি দেওয়ার নাম করে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ! বার বার টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও, ফেরাননি টাকা। তাই, শনিবার প্রাক্তন বিধায়ক ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতাকে গাছে বেঁধে বেধড়ক পেটালো পাওনাদারেরা। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা ব্লকের সত্যপুর অঞ্চলের। অভিযোগের তীর ডেবরার প্রাক্তন বিধায়ক সেলিমা খাতুন ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন INTTUC এর নেতা দিলীপ পাত্রের বিরুদ্ধে! জানা যায়, এলাকারই বাসিন্দা কানাই লাল মুর্মু-কে রেলের চাকরি করে দেবেন বলে বছর আড়াই আগে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক (সেলিমা খাতুন বিবি) ঘনিষ্ঠ দিলীপ পাত্র। চাকরি হয়নি! বার বার বলা সত্ত্বেও টাকাও ফেরাননি। তাই, শনিবার বালিচক থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে সত্যপুরে একটি গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করা হয় ওই তৃণমূল নেতাকে। আদিবাসীদের সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের সদস্যদের উপস্থিতিতেই ওই তৃণমূল নেতাকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয় বলে জানা গেছে। পরে ডেবরা থানার পুলিশ গিয়ে আক্রান্তকে উদ্ধার করে।

thebengalpost.net
গাছে বেঁধে মার তৃণমূল নেতাকে:

এদিকে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা দিলীপ পাত্রের স্বীকারোক্তি, “টাকা নিয়ে কলকাতায় একজনকে দিয়েছিলাম, আমি সরাসরি টাকা নিইনি। কমিশনের জন্য কাজ করেছিলাম!” অভিযোগকারী কানাই লাল মুর্মু বলেন, রেলের সুপারভাইজারের চাকরি দেব বলে ৫ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। বললেন, কলকাতায় যেতে হবে। আপনি চলুন। জয়েন করিয়ে দেব। ওর একজন শাগরেদ আছে।” অপরদিকে, দিলীপ পাত্র বলেন, “আমার মাধ্যমে এক জনকে টাকা দেওয়া হয়েছিল কলকাতায়। এক মাস কাজ করানোর পরে ছেলেটাকে বাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে। রেলে ওয়ার্কশপে কাজের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছিল। আমাকে বিশ্বাস করে আমার মাধ্যমে ওরা টাকাটা দিয়েছিল এটা ঠিক। কিন্তু, এক মাস পরে যখন ছেলেটা বাড়ি ফিরে আসে তখন টাকা ফেরতের জন্য বলা হয়। কিন্তু, যিনি টাকা নিয়েছিলেন তিনি দিচ্ছি দিচ্ছি বলে দীর্ঘদিন কাটিয়ে দেন। ওঁর দেওয়া তারিখ মতো আমিও তারিখ দিতে থাকি। কিন্তু, কথা রাখতে পারিনি!” এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, “চাকরি দেব বলে এক আদিবাসী যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। দিতে পারেননি। স্বাভাবিক যা হয়। সেই মানুষ তাঁকে ধরে অসম্মান করেছেন। গাছে বেঁধেছেন। আমি খবর পাওয়া মাত্র সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে বলেছি, আগে ওঁকে গ্রেফতার করুন। তারপর গরিব মানুষের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। যারা ওঁকে তৃণমূলের বলে চালানোর চেষ্টা করছেন তাঁদের বলি, বহু মানুষ তৃণমূল করেন। আর উনি বহু আগে তৃণমূল করতেন। আমরা ওঁকে সরিয়ে দিয়েছি।” এই বিষয়ে প্রাক্তন বিধায়কের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

thebengalpost.net
প্রাক্তন বিধায়ক সেলিমা খাতুনের সঙ্গে (ফাইল ছবি):