দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৩ নভেম্বর: শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনীর বুড়িশোল গ্রামের গৃহবধূ সুদেষ্ণা পাল। শনিবার ভোরের দিকে বুঝতে পারেন স্বামী ও পরিজনেরা! তখন থেকেই (ভোর ৪টা নাগাদ) চারপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। খুঁজতে খুঁজতেই বাড়ির পাশের পুকুরের ঘাটে একটি টর্চ জ্বলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপরই, খবর দেওয়া হয় জেলেদের। জানানো হয় শালবনী থানাতেও। দুপুর নাগাদ পুকুরে জাল ফেলা হয়। গ্রামে আসেন শালবনী থানার পুলিশ আধিকারিকরাও। তবে, কিছুই পাওয়া যায়নি। শনিবার সন্ধ্যার পর সন্ধান চেয়ে পোস্ট করা হয়েছিল ফেসবুকেও (Facebook)। এরপর, রবিবার সাত সকালেই পুকুরের জলে ভেসে ওঠে সুদেষ্ণার দেহ! খবর দেওয়া হয় শালবনী থানাতে। পুলিশ এসে পুকুর থেকে বছর ১৮’র গৃহবধূর নিথর দেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

thebengalpost.net
সুদেষ্ণা পাল:

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে প্রত্যন্ত বুড়িশোল গ্রামের অবস্থাপন্ন পরিবারে বিয়ে হয় সুদেষ্ণার। যদিও তখন তাঁর বিয়ের বয়স-ই হয়নি বলে পরিবার সূত্রে খবর। মাত্র ১৬-১৭ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয় বুড়িশোল গ্রামের ব্যবসায়ী নিকুঞ্জ পালের বছর ৩০ এর ছেলে রাজেশ্বর পালের। দু’জনের একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানও আছে। বয়স মাত্র ১০ মাস। এই পরিস্থিতিতে, স্বামী ও সন্তানকে বিছানায় রেখে, মধ্যরাতে (রাত্রি ১২টা-সাড়ে ১২ টা নাগাদ) একা কেন পুকুরে গিয়েছিলেন সুদেষ্ণা সেই প্রশ্ন উঠছে! স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের তা বুঝতে বুঝতে কেনই বা ভোর চারটা হয়ে গেল, তা নিয়েও সন্দেহ দানা বাঁধছে অনেকের মনে। মৃত্যু রহস্যের সঠিক তদন্তের দাবি করেছে উভয় পরিবারই। আত্মহত্যা, নাকি পুকুরে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু, না খুন? এই রহস্যের উন্মোচন করুক পুলিশ, চাইছেন এলাকাবাসীও। রবিবার সন্ধ্যা অবধি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি সুদেষ্ণার বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছেন তাঁরা। পুলিশও তাই। রাজেশ্বরের জেঠু অর্থাৎ সুদেষ্ণার জেঠতুতো শ্বশুর বিশ্বনাথ পাল জানিয়েছেন, “খুব ভালো ও মিশুকে মেয়ে ছিল। একটু অভিমানি মনের ছিল ঠিকই; কিন্তু কারুর সঙ্গে কোনো সমস্যা ছিলোনা। বাড়িতে কিছু ঘটেওনি। আমরাও বুঝতে পারছি না, কোথা থেকে কি হয়ে গেল! পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করে বের করুক, এটাই চাইছি।”

thebengalpost.net
পুকুর থেকে উদ্ধার হল দেহ: