দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৯ নভেম্বর: গত কয়েকদিন ধরে বেঙ্গল পোস্ট সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ধারাবাহিক খবরের জেরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সবং ব্লকের দাঁড়রা- ৩ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের খেলাগেড়িয়া মৌজার বাগালপাড়া গ্রামে বৃহস্পতিবার পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় পুরো ব্লক ও পঞ্চায়েত অফিস। অভিযোগ ছিল, বাল্যবিবাহের। নাবালক ও নাবালিকাদের যথাক্রমে পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের কঠিন দায়িত্ব পালনের। অভিযোগ ছিল, অশিক্ষা, অজ্ঞতা, অসচেতনতা, অপুষ্টি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের। তবে, আপাতত সেসবের উপর গুরুত্ব না দিয়ে, ব্লক প্রশাসন প্রমাণ করার চেষ্টা করলো, বুলটি বাগাল সহ এই গ্রামের কোনো মেয়ের ‘নাবালিকা’ অবস্থায় বিয়ে হয়নি বা মাতৃত্ব আসেনি! তবে, বৃহস্পতিবার ওই গ্রামে পাওয়া যায়নি বুলটির ১৯ বছর বয়সী স্বামী বচ্চন বাগাল-কে। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে যে স্বীকার করেছিল, তার দুই সন্তানের একজনের বয়স ৭ এবং অন্যজনের ৪। গ্রামে দেখা মেলেনি সরস্বতী বাগাল, মালা বাগালদেরও। তবে, বৃহস্পতিবার বুলটির আধার কার্ড দেখানো হয়েছে, যেখানে তার বয়স- ২২ বছর!
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, খেড়িয়া শবর অধ্যুষিত সবংয়ের এই বাগালপাড়া গ্রামে যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রবেশ করেনি, তা বোধহয় এতদিন স্থানীয় প্রশাসন কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসেনি! এই গ্রামে যে নেহাতই নাবালিকা ছেলে-মেয়েদের বিয়ে ও সন্তানধারণ সম্পন্ন হয়, তা সংশ্লিষ্ট কেউই জানতেন না বা মানেন না! সম্প্রতি প্রকাশিত, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরের পরই তাই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই গ্রামে পৌঁছে যেতে হয় প্রায় পুরো ব্লক ও পঞ্চায়েত অফিসকে! সঙ্গে ছিলেন থানার আধিকারিকরাও। পরোক্ষে কাঠগড়ায় তোলা হয়, ওই গ্রামে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সচেতনতার ‘আলো’ নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া দুই শিক্ষক সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে। প্রশ্ন উঠছে, তাতে কি বাগালপাড়ার হাল ফিরবে! যদিও, ওই দুই শিক্ষক (শান্তনু অধিকারী ও ভাস্কর ব্রত পতি) এবং স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাগালপাড়ার হাল ফেরাতে বদ্ধপরিকর প্রশাসন! তবে, কতদিনে হাল ফিরবে এবং কতটাই বা হাল ফিরবে, তা আগামী কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসেই বোঝা যাবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।
*** এই গ্রামের নাবালক-নাবালিকারাই পিতা-মাতা…