দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ মে: ডাক্তারির ডিপ্লোমা কোর্স করানো যায় কিনা, বৃহস্পতিবার ‘নবান্ন’ থেকে সচিবদের ভেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ বছরের MBBS ডিগ্রির পরিবর্তে ৩ বছরের ডিপ্লোমা কোর্স করিয়ে গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে পোস্টিং দেওয়ার বিষয়ে প্রস্তাব ছিল তাঁর! এছাড়াও, নার্স কিংবা পুলিশ নিয়োগের ক্ষেত্রেও প্রশিক্ষণের সময় কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর, এরপরই রাজ্য জুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়! শুক্রবার দুপুরে একদা মাও অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের পিড়াকাটায় অনুষ্ঠিত একটি কর্মী সম্মেলন উপস্থিত হয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাবিত এই ‘ডিপ্লোমা-ডাক্তার’ বিষয়ে কটাক্ষ করে বলেন, “সিভিক পুলিশ, সিভিক টিচারের পর দিদিমণি এবার সিভিক চিকিৎসক নিয়োগের কথা বলছেন। কখনও কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলেই ওনার মুখে যা আসে বলে দেন! ৫ বছর পড়লে ডাক্তার হয়। উনি ৩ বছর পড়িয়ে ডাক্তার করবেন! ওদের কাছে কি তৃণমূলের নেতারা চিকিৎসা করাতে যাবে? ১০ দিনে নার্স, ৩ বছরে ডাক্তার! যারা প্রতি বছর ডাক্তারি পড়ে বেরোচ্ছেন, তাঁদের উনি নিয়োগ দিতে পারছেন না! গ্রামের লোকের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করছেন! তাঁদের জীবনের কি কোনো দাম নেই নাকি? সিভিক চিকিৎসকদের গ্রামে পাঠাবেন বলছেন!”
এরপরই, দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা মেদিনীপুরে বলেন, “ওনার বাস্তব কোনো ধারণা নেই। এখনও গ্রামবাংলায়, প্রত্যন্ত এলাকায় মানুষের কিছু হলে; তারা প্রথমেই গ্রামীন চিকিৎসক বা কোয়াক ডাক্তারের কাছে যান। আমি নিজেও আমার ওয়ার্ডের DMS ডাক্তার বাবুর কাছেই প্রথমে ছুটে যাই। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী অনেকদিন থেকেই চাইছিলেন, এই ধরনের চিকিৎসকদের কোন মেডিকেল কলেজ থেকে যদি কোর্স করানো যায়! তবে, বড় কিছু হলে আলাদা। সেজন্য মেডিকেল কলেজ আছে। সেখানে বিনে পয়সায় সমস্ত পরিষেবা দেওয়া হয়। আমাদের সরকার অনেক সুপার সোসালিটি হাসপাতাল করেছে, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মানোন্নয়ন করেছে, কিন্তু, শহরের ডাক্তারবাবুরা গ্রামে আসতে চান না! তাই, আমরা মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছি। উনি (দিলীপ ঘোষ) বাজার গরম করা কথা বলেন। বাস্তবে গ্রাম বাংলা সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই!”