দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ মার্চ:উড়িষ্যার ভুবনেশ্বর থেকে ভাড়া নিয়ে কলকাতা উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। গত ১ মার্চ ভোররাতে তাঁর মোবাইলের শেষ লোকেশন পাওয়া গেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর। জানিয়েছিলেন, একটি হোটেলে আছেন। তারপর থেকে মোবাইল সুইচ অফ। কোনও খোঁজ নেই ভুবনেশ্বরের সত্যনগর এলাকার বাসিন্দা বছর ৩০ এর রাজন সৎপতির। প্রায় ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তাঁর কোন খোঁজ না পেয়ে চরম উদ্বেগে পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবেরা। ২ মার্চ ভুবনেশ্বর থানায় মিসিং ডায়েরি করেছেন তাঁরা। সেই থানা থেকেই বলা হয়েছে, রাজনের শেষ মোবাইল লোকেশন রেলশহর খড়্গপুরের পুরাতন বাজার! আর, সেজন্যই শুক্রবার (৪ মার্চ) উড়িষ্যার সর্বভারতীয় ড্রাইভার মহাসঙ্ঘের সভাপতি প্রদীপ কুমার মোহান্তি সহ একাধিক ড্রাইভার তথা রাজনের সহকর্মীরা খড়্গপুর টাউন থানায় এসেছিলেন বন্ধুর খোঁজ পেতে। সব শুনে, উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিলেও খড়্গপুর টাউন থানার তরফে কোনো মিসিং ডায়েরি নেওয়া হয়নি, কারণ ভুবনেশ্বর থানায় ইতিমধ্যে মিসিং ডায়েরি করা হয়েছে। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য খড়্গপুর ও ভুবনেশ্বরে।

thebengalpost.net
রাজন সৎপতি (পরিবার সূত্রে প্রাপ্ত ছবি) :

উল্লেখ্য যে, রাজন তাঁর স্ত্রী-কে ১ মার্চ গভীর রাতে অর্থাৎ ২ মার্চ রাত্রি ১২-১ টা নাগাদ জানিয়েছিলেন, “একটি হোটেলে আছেন।” তবে, কোনো ঠিকানা বলেননি! প্রসঙ্গত, ভুবনেশ্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে একটি ভাড়া নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন রাজন সৎপতি। ভুবনেশ্বর থানা সূত্রে বন্ধু ও সহকর্মী অতুল সিং সহ সকলে যেটা জানতে পেরেছেন, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭ টা ২৫ নাগাদ লক্ষণনাথ রোড টোল প্লাজা হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন এলাকায় প্রবেশ করেন ভুবনেশ্বরের বাসিন্দা রাজন।এরপর, ফের ১ মার্চ রাত্রি ৮-টা বেজে ৫ মিনিটে ওই লক্ষণনাথ টোল প্লাজা হয়ে ভুবনেশ্বরেল দিকে রওনা দেয় রাজনের ট্যাক্সি। কিন্তু, মাত্র ২৫ মিনিট পরে আবার লক্ষণনাথ রোড হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রবেশ করে রাজন সৎপতি’র গাড়ি। তারপর, রাত্রি ১ টা নাগাদ (অর্থাৎ ২ মার্চ) তাঁর স্ত্রী বা বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে শেষবারের জন্য কথা হয়। তারপর থেকে ফোন সুইচ অফ! কোথায় গেল, কি হল কিছুই বুঝতে পারছেন না পরিবার পরিজন থেকে বন্ধুবান্ধব ও সহকর্মীরা। বাড়ির একমাত্র ছেলে রাজন পেশায় ছিলেন ওলা-উবের জাতীয় ওড়িশার একটি সংস্থা’র গাড়ির চালক। তাঁর খোঁজে বিভিন্ন থানায় তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁর বন্ধু ও সহকর্মীরা। শুক্রবার খোঁজ করতে করতে খড়্গপুরে পৌঁছে যান তাঁদের অ্যাশোসিয়েশন বা সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু, এখনও খোঁজ মেলেনি। যদিও, উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন খড়্গপুর টাউন থানার আধিকারিকরা। ঘটনায় দুষ্কৃতী যোগ, ছিনতাই বা কিডন্যাপিং এর বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছেন না কোন পক্ষই! সবমিলিয়ে, এই মুহূর্তে চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় রাজনের পরিবার-পরিজন থেকে বন্ধু বান্ধব ও সহকর্মীরা।