দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৪ জানুয়ারি: মিনি ইন্ডিয়া খড়্গপুরে ফের সৌজন্যের রাজনীতি! এর আগে বাম শমিক সংগঠনের খুলে দেওয়া পতাকা লাগিয়ে দিয়েছিলেন মেদিনীপুর জেলা ও খড়্গপুর শহর নেতৃত্ব। শুধু তাই নয় একাধিকবার সৌজন্যে দেখিয়েছেন খড়্গপুর পৌরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপারসন প্রদীপ সরকার। এবার, রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে সেই প্রদীপের প্রতিই সৌজন্য দেখালেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সংসদ দিলীপ ঘোষ। সদ্য মাতৃহারা হয়েছেন প্রদীপ। মঙ্গলবার ছিল পারলৌকিক ক্রিয়া পরবর্তী নিয়মভঙ্গের অনুষ্ঠান। সেই নিয়মভঙ্গের অনুষ্ঠানে হাজির হলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সেখানে তিনি মিষ্টি মুখও করলেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “প্রদীপ দা আমাদের এখানকার চেয়ারম্যান ছিলেন। এখনও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন‌। এখানকার বিধায়ক ছিলেন। একসঙ্গে রাজনীতি করেছি। মাতৃ বিয়োগ হয়েছে। দুঃখের দিন, সবচেয়ে কঠিন সময় এটা। আমি খড়্গপুরে ছিলাম। দেখা করে, শ্রদ্ধাঞ্জলি দিয়ে গেলাম মা’কে। পরিবারের সঙ্গে দেখা হলো।” খড়্গপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তথা খড়গপুর পৌরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকার বলেন, “খড়গপুর সবসময়ই সৌজন্যের রাজনীতি দেখিয়েছে। যখন জ্ঞান সিং সোহম পাল মারা যান, তখন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী ওনার জন্য কলকাতা থেকে গ্যান স্যালুটের ব্যবস্থা করেছিলেন, তার আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। ওঁর নামে আজ পর্যন্ত স্মৃতিসৌধ করা আছে। রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতে পারে, বিরোধ থাকতে পারে, সৌজন্যের রাজনীতি যাতে বহাল থাকে তা চেষ্টা করেছি। মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে আজ উনি আমার বাড়িতে এসেছেন। এই সৌজন্যের রাজনীতি যাতে সব সময় বহাল থাকে, সেটা আমরা খড়্গপুরে চেষ্টা করব।”

thebengalpost.net
প্রদীপ সরকারের বাড়িতে দিলীপ ঘোষ:

অন্যদিকে, সামনেই পৌরসভা নির্বাচন! কঠিন লড়াই। তবে, রাজনৈতিক দূরত্ব ঘুচলোনা খড়্গপুর সদরের বর্তমান বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন বিধায়ক তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের। মঙ্গলবারও পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে দলের (মূলত দিলীপ ঘোষের) ডাকা বুথ স্তরের মিটিংয়ে গরহাজির থাকলেন বিধায়ক হিরণ (হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়)। প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই খড়্গপুরের বর্তমান বিধায়ক হিরণ এবং খড়্গপুরের একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক দিলীপ ঘোষের গোষ্ঠীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য শুরু হয়। রেল, আইআইটি প্রভৃতি নিয়েও দু’জনে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ্যে বিবাদ ও হাতাহাতিও দেখেছেন শহরবাসী। দিলীপ গোষ্ঠী’র উত্তর মন্ডল সভাপতি দীপসোনা ঘোষকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে জেলে যেতে হয়েছে! অভিযোগকারিণী সেখানে হিরণ গোষ্ঠীর তৃষা চাকলাদার। অন্যদিকে, দিলীপ অনুগামীদের পোস্টারে দেখা যায়নি বিধায়ক হিরন্ময় চট্টোপাধ্যায়ের ছবি! এর আগেও দিলীপ ঘোষ তথা বিজেপি’র একাধিক কর্মসূচিতে অনুপস্থিত থেকে, হিরন্ময় নিজের মতো কর্মসূচি পালন করেছেন। এদিনও, দলের বৈঠকে অনুপস্থিত থেকে ফের একবার দিলীপের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখলেন হিরণ! এ নিয়ে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “কেন এলেন না সেটা ওনাকেই জিজ্ঞেস করা উচিত। তবে, বিধানসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ছিল বলে শুনেছি”। অন্যদিকে হিরণ জানিয়েছেন, “দলকে আগেই জানিয়েছিলাম বিধানসভায় বৈঠক থাকার জন্য আজ উপস্থিত থাকতে পারবো না”। তবে, এ তো শুধু ক্যামেরার সামনের কথাবার্তা! খড়্গপুরের একটা কলেজ পড়ুয়া ছাত্রও এতদিনে জেনে গেছে, বর্তমান বিধায়ক আর প্রাক্তন বিধায়কের ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা!