দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, মেদিনীপুর, ২০ মার্চ: ২০-৫ ব্যবধানে মেদিনীপুর পৌরসভা দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন সৌমেন খান, ভাইস চেয়ারম্যান অনিমা সাহা।‌ সবকিছুতেই মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া’র ‘হাতযশ’ দেখছেন তাঁর অনুরাগীরা! অস্বীকার করছেন না জুন নিজেও। তাই, শহরজুড়ে বড় বড় কাটআউটে লেখা, “বিশ্বাস ও আস্থা রাখার জন্য ধন্যবাদ।” তবে, তার পরেও থেমে নেই জুন! ১৬ মার্চ কাউন্সিলর-দের শপথগ্রহণের পর, মাঝখানে দোলের ছুটিছাটা কাটিয়েই ফের চমক। আজ, রবিবার (২০ মার্চ), জেলা শহর মেদিনীপুরের নান্নুরচক স্থিত একটি হোটেলে মিলনানুষ্ঠান বা গেট টুগেদার (Meet and Greet) এর আয়োজন করা হল বিধায়ক জুন মালিয়া’র পক্ষ থেকে। সেখানেও আবার অপেক্ষা করে ছিল চমক! তৃণমূলের জয়ী ২০ জন কাউন্সিলর ছাড়াও, জুনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পৌঁছে গেলেন ২১ নং ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর মহঃ সাইফুল এবং ১৪ নং ওয়ার্ডের নির্দল কাউন্সিলর অর্পিতা রায় নায়েক। শুভেচ্ছা গ্রহণ করলেন, হাসিমুখে ছবি তুললেন! তবে কি তৃণমূলের পথে? দু’জনই বললেন, “এক্কেবারেই না! পুরোটাই সৌজন্য। বিধায়ক হিসেবে আমন্ত্রণ পাঠিয়েছিলেন। কাউন্সিলর হিসেবে এসেছি!” তবে, নিন্দুকেরা অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন, “শুধুই সৌজন্য?” উত্তরের জন্য অবশ্য ‘অপেক্ষা’ করতে হবে!

thebengalpost.net
সাইফুলের সঙ্গে জুন মালিয়া:

তবে, আমন্ত্রণ পেয়েও আসেননি সিপিআইএম এর ৩ কাউন্সিলর, যথাক্রমে- ১০ নং ওয়ার্ডের সৃজিতা দে বক্সী, ৩ নং ওয়ার্ডের প্রশান্ত মান্ডি এবং ২৪ নং ওয়ার্ডের গোপাল ভট্টাচার্য। এনিয়ে সৃজিতা জানিয়েছেন, “আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম।” যাননি কেন? “দলগত সিদ্ধান্ত। এনিয়ে আর কিছু বলতে চাইনা, প্লিজ!” ঠিক উল্টো দিকে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সমীর রায় আবার ব্যাট ধরেছেন সাইফুলের পক্ষে! তিনি বললেন, “আমাদের অনুমতি নিয়েই আমাদের কাউন্সিলর গিয়েছিল। তৃণমূল নেত্রী হিসেবে নয়, মেদিনীপুরের বিধায়ক হিসেবে ডেকেছিলেন। সৌজন্য রক্ষার্থে গিয়েছিল সাইফুল।” ২১ নং ওয়ার্ডের ‘জায়ান্ট কিলার’ কংগ্রেসের সাইফুল। হারিয়েছেন, প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক আশিস চক্রবর্তী-কে! সাইফুল বললেন, “সৌজন্য রক্ষার্থে গিয়েছিলাম। আমি খাইনি। ওনার (বিধায়ক জুন মালিয়া’র) সাথে দেখা করেই চলে এসেছি।” তা সত্ত্বেও, নিন্দুকেরা অবশ্য ‘রাজনীতি’ খুঁজছেন! এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, তৃণমূলের পরাজিত ৫ প্রার্থীর মধ্যে আবার ৪ জন উপস্থিত থাকলেও, ছিলেন না শুধুমাত্র আশিস (নান্টি)-ই! শোনা যায়, ‘নিজের হার’ এখনও মেনে নিতে পারছেন না আশিস। রাজ্য নেতৃত্বের কাছে নাকি অভিযোগও জানিয়েছেন, দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে! তবে, তৃণমূলের জয়ী ২০ জন কাউন্সিলরের সাথে সাথে, উপস্থিত ছিলেন- ৩, ১০, ১৪ ও ২৪ নং ওয়ার্ডের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীরাও। ছিলেন পিংলার বিধায়ক ও জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তথা পৌর নির্বাচনে দলের তরফে নিযুক্ত কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি, কর্মাধ্যক্ষ নেপাল সিংহ এবং মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান, ভাইস চেয়ারম্যান অনিমা সাহা ও আধিকারিক বৃন্দ সহ অনেকেই। তবে, ছিলেন না মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। দেখা যায়নি, রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোৎ ঘোষ, জেলা চেয়ারম্যান ও বিধায়ক (খড়্গপুর গ্রামীণ) দীনেন রায়-কেও। তবে, তাঁদেরও নাকি আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। জানা গেল, জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা মোহনপুর ব্লকে দলীয় একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন কাজের মধ্যে ছিলেন বলেই হয়তো আসতে পারেননি দীনেন, প্রদ্যোৎ, আশিস-রাও। যদিও, নিন্দুকেরা এর মধ্যেও ‘রাজনীতি’ খুঁজছেন!

thebengalpost.net
বিধায়ক জুন মালিয়া’র সঙ্গে অর্পিতা রায় নায়েক: