দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৮ মে: এগরা বিস্ফোরণ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত তথা ‘অবৈধ’ বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু বাগকে ওড়িশার হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করলো পুলিশ ও সিআইডি’র টিম। তাঁর ছেলে পৃথ্বীজিৎ বাগ এবং ভাইপো ইন্দ্রজিৎ বাগকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। জানা যায়, বিস্ফোরণে ভানুর শরীরের ৭০ শতাংশই ঝলসে গেছে। ওড়িশার কটকের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ভানু। সেখানেই গ্রেফতার করার পর তাঁকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তবে, ছেলে ও ভাইপো-কে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য যে, এগরা ১ নং ব্লকের সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিকুল গ্রামের অবৈধ বাজি কারখানায় গত মঙ্গলবার বেলা ১২-টা নাগাদ যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে তাতে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক তরুণী এবং এক যুবক কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন! এছাড়াও, আরও কয়েকজন জখম অবস্থায় উড়িষ্যার দিকে পালিয়ে গেছেন বলে এলাকাবাসীদের দাবি।
সেই ঘটনাতেই এবার ওই অবৈধ বাজিকারখানার মালিক ষাটোর্ধ্ব ভানু বাগকে গ্রেফতার করল পুলিশ ও সিআইডি। মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ঘটনার দিন বিকেলেই সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিলেন, “ভানু উড়িষ্যার দিকে পালিয়ে গেছে!” তবে, ভানুর বিরুদ্ধে লঘু ধারায় (বিস্ফোরক ব্যবহার ও অনিচ্ছাকৃত খুন) মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। জানা যায়, গতবছর (২০২২) কালী পুজোর সময়ও অবৈধ বাজি কারখানা চালানোর অপরাধে ভানু ওরফে কৃষ্ণপদ বাগ-কে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে জামিন পেয়ে যায়। অভিযোগ, গত ৩০ বছর ধরে এগরার ‘বাজি-গর’ ভানু পুলিশি মদতে তার অবৈধ বাজি কারখানা চালিয়ে যাচ্ছেন। এর আগেও ঘটেছে বিস্ফোরণ। ৫-৬ জনের মৃত্যুও হয়েছে। তাতেও থামেনি ভানুর বাজি ব্যবসা! বারবার স্থান পরিবর্তন করে বাজি কারখানা গড়ে তুলেছেন। এলাকাবাসীদের অভিযোগ পুলিশের কিছু কর্মী এসে প্রতি সপ্তাহে টাকা নিয়ে যেতেন ভানুর কাছ থেকে। যদিও, এবার আর বাজি নয়, গ্রামবাসীদের অভিযোগ অনুযায়ী ওখানে বোমা তৈরি হচ্ছিল! মৃতের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে বুধবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভানুর কারখানায় বোমা তৈরি হচ্ছিল। ঘটনার NIA তদন্ত চাই।” ইতিমধ্যে, এনআইএ তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করেছেন শুভেন্দু।