দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ৮ জুলাই: শেষ হয়েছে বিয়েবাড়ি (দুই ছেলের বিয়ে)। শর্তাধীন জামিন বা প্যারোল শেষ হচ্ছে, আজ শুক্রবার (৮ জুলাই)। আর, আজ (শুক্রবার)-ই কলকাতায় NIA’র কোর্টে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন দোর্দণ্ড প্রতাপ নেতা তথা বর্তমানে রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর। তবে, তার আগেই বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) বিকেল থেকে বুকে ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর! সন্ধ্যা নাগাদ প্রথমে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং গভীর রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। ঘড়ির কাঁটায় শুক্রবার (৮ জুলাই) রাত্রি সাড়ে বারোটা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যালের অবজরাভেশন ওয়ার্ডে (Observation Ward) ভর্তি করা হয় ছত্রধরকে। মেডিক্যাল কলেজ চত্বর জুড়ে ছিল কড়া পুলিশি প্রহরা! আপাততো বহাল তবিয়তেই তিনি এই বিশেষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন বলে জানা যায়। গভীর রাতে মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি’র দুই নেতা অরূপ দাস ও শুভজিৎ রায় জানিয়েছেন, “ওঁকে বোধহয় মদন-রোগে (মদন মিত্র?) পেয়েছে! আদালতে হাজিরা দেওয়ার আগের রাতেই বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট!”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দুই ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্যারোলে বাড়িতে এসেছিলেন ছত্রধর। গত ২ জুলাই বাড়ি এসেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মুক্তির মেয়াদ ধার্য করেছিল আদালত। ৮ জুলাই, শুক্রবার এনআইএ’র বিশেষ আদালতে তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। তবে, বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ের আমলিয়া গ্রামে দুই ছেলের (দেবীপ্রসাদ ও ধৃতিপ্রসাদ) প্রীতিভোজের অনুষ্ঠান শেষেই তিনি অসুস্থতা বোধ করেন বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। বৃহস্পতিবার সকালে লালগড় হাসপাতালে ডাক্তার-ও দেখান। বিকেল ৫-টা নাগাদ শ্বাসকষ্ট বাড়ছে বলে অনুভব করেন তিনি! এরপরই, ভর্তি করা হয় ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। অবজারভেশন ওয়ার্ডে রেখে দেওয়া হয় অক্সিজেন। এরপর, গভীর রাতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। ছিল কড়া পুলিশি নিরাপত্তা! টানটান উত্তেজনা থাকলেও, বিশাল সুরক্ষা বলয়ের মধ্য দিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে রাত্রি ১২ টা নাগাদ পৌঁছন ছত্রধর। সাড়ে বারোটা নাগাদ ভর্তি করা হয় অবজারভেশন ওয়ার্ডের বিশেষ কেবিনে। ছত্রধরের আইনজীবী কৌশিক সিনহা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আদালতের নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালন করে চলেছেন আমার মক্কেল। কিন্তু, হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বিষয়টি আদালতে জানানো হবে, সেখানে থেকে যেমন নির্দেশ আসবে সেই ভাবেই থাকবেন ছত্রধর।” আর, বিজেপি ও বামেরা বলছেন, পুরোটাই বুজরুকি! বিজেপি’র মেদিনীপুর জেলা সহ সভাপতি অরূপ দাসের কটাক্ষ, “হাজিরা এড়ানোর নাটক। ওঁর দলের মদন থেকে অনুব্রত যা করেছেন, রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর-ও তাই করছেন! এঁরাই হচ্ছে তৃণমূলের আসল সম্পদ। জনগণ সব দেখছেন।”