তনুপ ঘোষ, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১০ জুলাই: “তারি লাগি রাত্রি-অন্ধকারে চলেছে মানবযাত্রী যুগ হতে যুগান্তর-পানে/ ঝড়ঝঞ্ঝা-বজ্রপাতে, জ্বালায়ে ধরিয়া সাবধানে/ অন্তর প্রদীপখানি।” (এবার ফিরাও মোরে/ রবীন্দ্রনাথ) অন্তর-প্রদীপখানি জ্বালিয়ে কেউবা যাত্রা করেন পবিত্র কেদারনাথের উদ্দেশ্যে, কেউবা অন্তরের আহ্বানে ‘আপন মনের মাধুরী মিশায়ে’ বাড়িতে বসেই তৈরি করেন কেদারনাথ মন্দিরের ক্ষুদ্র সংস্করণ। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার শিল্পী শুভজিৎ শোনালেন, “হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত পবিত্র কেদারনাথ ধাম অতি দুর্গম স্থানে অবস্থিত। আমার মতো অনেকেরই ইচ্ছে থাকলেও সেখানে সহজে পৌঁছে যাওয়ার উপায় নেই! তাই, বাড়িতে বসেই বাবা বিশ্বনাথ বা কেদারনাথ-এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করলাম। তবে, একবার যাওয়ার খুব ইচ্ছে আছে কেদারনাথের উদ্দেশ্যে।” চন্দ্রকোনা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড রঘুনাথপুরের যুবক শুভজিৎ প্রামাণিক চক পেনসিল কেটে মাত্র ৫ সেন্টিমিটার উচ্চতা এবং ৩.৫ সেন্টিমিটার চওড়া এই কেদারনাথ মন্দির তৈরি করে আপাততো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
বর্তমানে, ইংরেজিতে স্নাতক ও বিএড প্রশিক্ষিত শুভজিতের ছোটো বেলা থেকেই আঁকাআঁকি ও হাতের কাছে সহজাত প্রতিভা ছিল। গত প্রায় তিন-চার বছর ধরে মাইক্রো আর্টের কাজ শুরু করেছেন শুভজিৎ। পেন্সিল কেটে ক্ষুদ্রতম অশোক স্তম্ভ তৈরির জন্য ২০২০ সালে পেয়েছেন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসের পুরস্কার-ও। এছাড়াও, পেপার কাটিং করে একই কাঠামোতে দুর্গা এবং লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক গনেশের প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তুলেছেন। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, অতিমারী পরিস্থিতিতে গত দু’বছর বন্ধ ছিল কেদারনাথ যাত্রা। এ বছর পুনরায় তা চালু হয়েছে। তবে, কেদারনাথ যাওয়ার প্রবল বাসনা সত্ত্বেও শুভজিৎ এখনই কেদারনাথ ভ্রমণে যেতে পারবেন না! তাই, ৮ ঘন্টার প্রচেষ্টায় বাড়িতে বসেই তৈরি করেছেন কেদারনাথ মন্দিরের ক্ষুদ্র সংস্করণ। বাহবা দিচ্ছেন জেলাবাসী।