দ্য বেঙ্গল পোস্ট বিশেষ প্রতিবেদন, ১৯ আগস্ট: আফগানিস্তান দখল করার পর পেরিয়ে গেছে ৭২ ঘণ্টা! মুখে শান্তি চাই বললেও, আদতে যে শান্তি চায়না, তা আফগানিস্তান দখলের পর থেকেই বার বার প্রমাণ দিয়েছে তালিবানরা। এদিকে, গত কয়েকটা দিন প্রতিটা মুহূর্তে আফগান জনগণের আতঙ্কে কাটলেও, এবার সেই “আতঙ্ক” ঝেড়ে ফেলে জায়গায় জায়গায় উঠলো প্রতিবাদের ঝড়! আফগানিস্তানের পঞ্জশিরে এই প্রথম হোঁচট খেলো তালিবান রাজত্ব। উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে পিছু হটতে বাধ্য হল তালিবানরা। চিরকালের তালিবান বিরোধী নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের কমান্ডার আহমেদ মাসুদের নেতৃত্বে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে বিরোধিতা।
প্রসঙ্গত, পঞ্জশির তালিবান বিরোধী প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান স্ব-ঘোষিত প্রেসিডেণ্ট আমরুল্লা সালেহ (Amrullah Saleh)’র এলাকা। আমরুল্লা সালেহ নিজেকে প্রেসিডেণ্ট ঘোষণা করার পর থেকেই, দফায় দফায় চলতে থাকে তালিবান বিরোধী কার্যকলাপ। এমনকি, ইতিমধ্যেই তালিবান বিরোধীদের সঙ্গে বৈঠকও শুরু করেছেন সালেহ। তাজিক এবং আফগান সেনাবাহিনীর অনেকেই তাঁদের অস্ত্র নিয়ে পঞ্জশির পৌঁছেছেন বলে সূত্র মারফত খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, আফগানিস্তানের জালালাবাদে তালিবানদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুললেন সাধারণ মানুষ। জাতীয় পতাকা নিয়ে তালিবানদের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করতে দেখা যায়। বিরোধিতা দেখা যায় কাবুলেও। কাবুলের রাস্তায় তালিবানদের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড দেখাতে দেখা যায় মহিলাদের। গলায় শোনা যায় জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে স্লোগান!
উল্লেখ্য, আমরুল্লা সালেহর দেওয়া পোস্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানের সংবিধান অনুসারে প্রেসিডেন্টের মৃত্যু হলে অথবা অনুপস্থিত থাকলে, তাঁর পরিবর্তে ভাইস প্রেসিডেন্ট তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট হয়ে যান। সেই সুবাদেই নিজেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচন করেন সালেহ। উল্লেখ্য যে, ২০০১ সালে সালেহকে দেশের গুপ্তচর সংস্থা ন্যাশনাল ডিরেক্টর অব সিকিওরিটি বা NDS এর প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। অন্যদিকে, আফগানিস্তানের একটি সংবাদ সংস্থার পক্ষ থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি আমিরশাহীতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং তাঁর সাথে ইতিমধ্যেই দেশ ছেড়ে ইসলামাবাদে আশ্রয় নিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হামদুল্লাহ মুহিব, প্রেসিডেন্টের দফতরের প্রধান আধিকারিক ফাজেল মাহমুদ, পার্লামেন্টের স্পিকার মীর রহমান রহমানি, ইউনূস কানুনি, মহম্মদ মুহাকেক, করিম খলিলি, আহমেদ ওয়ালি মাসুদ এবং আহমেদ জিয়া মাসুদ। (তথ্যসূত্র- বিভিন্ন সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম, সম্পাদনা- সুদীপ্তা ঘোষ)