দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ নভেম্বর: মোবাইল-ই কাল করল! ‘রং নম্বর’ (Wrong Number) এর মাধ্যমে গড়ে ওঠা সম্পর্কের খেসারত দিতে হল পশ্চিম মেদিনীপুর এক গৃহবধূকে! প্রেমিকের ডাক উপেক্ষা করতে না পেরে, তার হাত ধরে পালিয়ে গিয়েছিলেন ভিন জেলায়। প্রেমিকের ‘চরম লালসা’র শিকার হয়ে ধর্ষিতা হতে হল! শারীরিকভাবে অত্যাচারিত হয়ে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হল। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে পুলিশ গিয়ে ওই বিবাহিত যুবককে গ্রেফতার করে এবং গৃহবধূকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাঁতন থানার। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে বেলদা থানার বাসিন্দা বছর ২৫ এর যুবতীর সাথে দাঁতন থানার মনোহরপুর এলাকার এক যুবকের বিয়ে হয়। কিন্তু, বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হয়নি! এর মধ্যেই গত ছ-সাত মাস আগে একটি ‘রং নম্বরে’ ফোন কলের মাধ্যমে দাঁতনের ওই গৃহবধূর সঙ্গে পরিচয় হয় পশ্চিম বর্ধমান জেলার জামুড়িয়া থানার চকদলা মোড় এলাকার এক বিবাহিত যুবকের সাথে। ধীরে ধীরে তৈরি হয় ‘পরকীয়া’ বা সমাজনিষিদ্ধ প্রেমের সম্পর্ক! সেই ‘প্রেম’ই ডেকে আনে বিপদ। প্রেমিকের ডাকে, তার হাত ধরে আসানসোলে চলে যাওয়া, তারপর শারীরিক নির্যাতনের শিকার! ওই গৃহবধূর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে দাঁতন থানার পুলিশ বাহিনী গিয়ে আসানসোল থেকে অভিযুক্ত যুবক সুজিত বাউরি (২৮) কে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে। ধৃতের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে গৃহবধূকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একটি রং নম্বর বা ভুল নম্বর থেকে আসা ফোন কলের মাধ্যমে গড়ে ওঠা যোগাযোগ থেকে দাঁতনের ওই গৃহবধূ ও জামুড়িয়ার ওই বিবাহিত যুবকের মধ্যে ‘অবৈধ’ প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয় গত ৬-৭ মাস ধরে। কর্মসূত্রে যুবক থাকত আসানসোল শহরে। এদিকে, গত শনিবার (৬ নভেম্বর) থেকে ওই গৃহবধূ উধাও হয়ে যান! জানা যায়, পরকীয়ার টানে ওই গৃহবধূ আসানসোলে চলে যান প্রেমিকের হাত ধরে। অভিযুক্ত যুবক সুজিত বাউরি দাঁতনে এসে প্রেমিকাকে নিয়ে যায়। এদিকে ঘটনার তিনদিন পর গৃহবধূর মা রেখা পন্ডা দাঁতন থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। অভিযোগ পেয়ে দাঁতন থানার পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। এর মধ্যেই খবর আসে গৃহবধূ আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। খবর পেয়েই, শুক্রবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দাঁতন থানার সেকেন্ড অফিসার বিশ্বজিৎ মন্ডলের নেতৃত্বে পুলিশর একটি দল আসানসোল জেলা হাসপাতালে পৌঁছে যায়। শুক্রবার রাতেই তাঁকে উদ্ধার করা হয়। অপরদিকে, মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে আসানসোল শহর থেকে তাঁর ‘গুনধর’ প্রেমিককে ধরা হয়। তারপর, শনিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে দু’জনকে দাঁতনে নিয়ে আসা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত যুবকের বিরুদ্ধে গৃহবধূকে প্রলোভন দেখিয়ে বা ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে ধৃতকে দাঁতন এসিজেএম আদালতে হাজির করা হয়। তদন্তের জন্য পুলিশ তাকে নিজেদের হেফাজতে চায়। বিচারকের নির্দেশে ধৃত সুজিত বাউরি’র দশ দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে।