দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১২ এপ্রিল: বাংলা জুড়ে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা! এবার পশ্চিম মেদিনীপুরে মধ্যযুগীয় বর্বরতার চিত্র। প্রতিবন্ধী যুবতীকে ধর্ষনের অভিযোগে সালিশি সভার নিদান দিল শাসকদল। এমনকি নীরব থাকার অভিযোগ পুলিশ প্রশাসনেরও। সাহায্য না পেয়ে অবশেষে নির্যাতিতা আদালতের শরণাপন্ন হল। আর, তারপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ঘটনাটি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা থানার একটি (যুবতীর সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রামের নাম দেওয়া হলনা) গ্রামের। সোমবার রাতে এক প্রতিবন্ধী যুবতীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠলো, ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য তথা শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী হিসেবে পরিচিত অভিজিত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরের কোতোয়ালী তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে।
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, সোমবার রাতে সালিশি সভা ডেকে গ্রামেই গোটা বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার তার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয় নির্যাতিতার পরিবারের ওপর। অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি পুলিসের তরফে। মঙ্গলবার দুপুরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ‘মেডিক্যাল’ করানোর পর নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে ইমেল মারফত অভিযোগ দায়ের করা হয় আদালতে। ঘটনা ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলায়। এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি তৃণমূল পঞ্চায়েতের তরফে। যদিও তৃণমূল বিধায়ক অজিত মাইতি জানিয়েছেন, “রাজনৈতিক রং না দেখে, সমগ্র ঘটনার সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে পুলিশকে।” তবে, বিজেপি এই গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ অজিত মাইতির।
অন্যদিকে গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বিজেপির জেলা সভাপতি তন্ময় দাস জানিয়েছেন, “ছিঃ! লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। ধর্ষণের বাংলায় কোন মহিলাই আজ নিরাপদ নয়।” পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত না করলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। উল্লেখ্য যে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানায় নির্যাতিতার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার সময় মেদিনীপুর জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনাকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পিংলা তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে।