দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ৫ এপ্রিল: শেষমেষ জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনার পরও বেরোলনা কোন রফা সূত্র। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারও অবরোধ-আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আদিবাসী কুড়মি সমাজ সহ বিভিন্ন কুড়মি সংগঠনের নেতৃত্বরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার (৪ এপ্রিল) থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের সংযোগস্থলে খড়্গপুর গ্রামীণের খেমাশুলিতে জাতীয় সড়ক (৬ নং) অবরোধ বা ‘ডহর ছেঁকা’ শুরু করেছেন কুড়মিরা। আর, আজ (৫ এপ্রিল, বুধবার) ভোর থেকে শুরু হয়েছে রেলপথ অবরোধ বা ‘রেল টেকা’ কর্মসূচি। খড়্গপুর ডিভিশনের অন্তর্গত খড়্গপুর-টাটানগর লাইনের খেমাশুলিতে এবং আদ্রা ডিভিশনের আদ্রা-চাণ্ডিল লাইনে কুস্তাউরে চলছে রেল অবরোধ। আজ, বুধবার দক্ষিণ পূর্ব রেলের এই দুই ডিভিশনে (আদ্রা ও খড়্গপুর) বাতিল করা হয়েছিল অন্তত ৭০টি ট্রেন। যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে আরও অন্তত ৮-১০টি ট্রেনের। আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারও (৬ এপ্রিল) বাতিল করা হয়েছে অন্তত ৭৮ থেকে ৮০টি ট্রেন। যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে ৮-১০টি ট্রেনের। দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হাওড়া-পুনে আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস (১২১৩০); হাওড়া-জগদলপুর এক্সপ্রেস (১৮০০৫); হাওড়া-আমেদাবাদ এক্সপ্রেস (১২৮৩৪); হাওড়া-পুনে দুরন্ত এক্সপ্রেস (১২২৪); হাওড়া-পুরুলিয়া-হাওড়া (১২৮৮৩/১২৮৮৪) এক্সপ্রেস; খড়্গপুর-হাতিয়া-খড়্গপুর এক্সপ্রেস (১৮০৩৫/১৮০৩৬) সহ আদ্রা-পুরুলিয়া-আদ্রা মেমু, টাটানগর-খড়্গপুর-টাটানগর মেমু, পুরি-নিউ দিল্লি এক্সপ্রেস; হাওড়া-বারবিল জনশতাব্দী এক্সপ্রেস; সাঁতরাগাছি-ঝাড়গ্রাম-সাঁতরাগাছি মেমু; আসানসোল-রাঁচি মেমু; খড়্গপুর-ঝাড়গ্রাম মেমু; হাওড়া-রাঁচি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস; পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম মেমু; ধানবাদ-টাটানগর মেমু সহ প্রায় ৭৮টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।
অন্যদিকে, বুধবার বিকেলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদরী এবং জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার। তবে, সেই বৈঠকে কোন রফাসূত্র বা সমাধান সূত্র বেরোয়নি। তাই, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে দেন কুড়মি সমাজের নেতৃবৃন্দ। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার জানান, আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনা হয়েছে। তাঁদের অনুরোধ করা হয়েছে, রমজান মাস চলছে। সাথে খড়্গপুর গ্রামীণের মাদপুরে চলছে মনসা পূজা উপলক্ষে মেলা। বহু মানুষের সমস্যা হচ্ছে। তাই, রাজ্য সরকার যেহেতু বিষয়টি দেখছে, আন্দোলন আপাতত প্রত্যাহার করা হোক। তবে, জেলা প্রশাসনের সেই প্রস্তাবে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা। আদিবাসী কুড়মি সমাজের নেতৃত্ব কমলেশ মাহাত এবং কুড়মি সমাজের রাজ্য নেতা রাজেশ মাহাত জানান, সরকারকে অবিলম্বে সিআরআই রিপোর্ট সংশোধন বা জাস্টিফাই করে পাঠাতে হবে। তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে। তবে, তাঁরা তাদের উচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলেও জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, এই আন্দোলন এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তির সমস্ত দায় তাঁরা সরকারের উপরই চাপিয়েছেন!