দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, ঝাড়গ্রাম ও খড়গপুর, ২১ সেপ্টেম্বর: মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে চুরি যাওয়া শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে মায়ের হাতে তুলে দিল রেল পুলিশ। ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশের সহায়তায় ঝাড়গ্রাম GRP থানার উদ্যোগে অভিযান চালিয়ে হাওড়ার শ্যামপুর থানা এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার ওই শিশুকন্যাকে উদ্ধার করা হয় বলে শুক্রবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে জানান, জিআরপি’র খড়্গপুর ডিভিশনের SRP দেবশ্রী সান্যাল। শুক্রবার খড়গপুর শহরে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে SRP দেবশ্রী সান্যাল পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, “গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে সুস্মিতা ভক্তা ও জগৎপতি ভক্তার ৯ মাসের শিশুকন্যা চুরি হয়ে যায়। সঞ্জয় খামরুই নামে তাঁদেরই স্বল্প পরিচিত এক যুবক তাঁদের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে শিশুকন্যাকে নিয়ে পালিয়ে যায় বলে ১৬ সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম জিআরপি থানায় তাঁরা অভিযোগ করেন। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে আমরা জানতে পারি ঝাড়গ্রাম স্টেশনের বাইরে একটি মারুতি ওমনি ভ্যান ভাড়া করে অভিযুক্ত সঞ্জয় ও তাঁর অন্ধ স্ত্রী ওই শিশুকন্যাকে নিয়ে চম্পট দেয়। তাদের সঙ্গে নিজেদের ছোট্ট ছেলেও ছিল। এরপর ওই ওমনি ভ্যানের চালক সহ অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা জানতে পারি, সঞ্জয়ের বাড়ি ঝাড়গ্রামের বেলিয়াবেড়া থানার পিড়াশুল এলাকায়। এও জানতে পারি, সঞ্জয় খামরুই একজন ‘পেশাদার চোর’। কিছুদিন আগেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। গরু চুরি সহ তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে বেলিয়াবেড়া থানা সহ বিভিন্ন থানাতে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সম্প্রতি সে খড়গপুর থেকে হাওড়ার মধ্যে বিভিন্ন স্টেশনে ঘাঁটি গেড়েছিল!”
এরপর, পাঁশকুড়া স্টেশন থেকে সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান খড়গপুর ডিভিশনের SRP সান্যাল। তিনি জানান, “সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, পাঁশকুড়া স্টেশনের ঠিকাকর্মী রেনুকা দাসকে সে মাত্র ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই শিশুকন্যাকে বিক্রি করে দেয়! এরপর, রেল পুলিশ রেনুকাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিআরপি জানতে পারে, রেনুকা তাঁর নিঃসন্তান মেয়ে সোমা রুইদাসের হাতে ওই শিশুকন্যাকে তুলে দিয়েছিলেন। সোমার শ্বশুরবাড়ি হাওড়ার শ্যামপুর থানা এলাকায়। বৃহস্পতিবার সেখান থেকেই ওই ৯ মাসের শিশুকন্যাকে উদ্ধার করে রেলপুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় সোমা রুইদাসকেও।” ধৃত সঞ্জয়, রেনুকা ও সোমাকে শুক্রবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তুলে রেল পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয়। সেই সঙ্গে উদ্ধার হওয়া শিশুকন্যাকে তুলে দেওয়া তার বাবা-মা’র হাতে। ঝাড়গ্রামের গজাশিমুলের বাসিন্দা দীনমজুর জগৎপতি ও তাঁর স্ত্রী সবজি বিক্রেতা সুস্মিতা ধন্যবাদ জানিয়েছেন রেল পুলিশকে!