দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, খড়্গপুর, ২৭ অক্টোবর: দীপাবলি-র আগেই দীপান্বিতা’র আলোয় আলোকিত দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ের খড়্গপুর ডিভিশন। দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে শাখায় এই প্রথম ইএমইউ লোকাল (EMU Local) চালালেন এক মহিলা। দেবী দশভুজার বিদায়ের পরের দিনই মেদিনীপুর-হাওড়া-মেদিনীপুর লোকাল ট্রেন ছোটালেন দীপান্বিতা দাস। এ যেন দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর মর্ত্যে আরেক নারী-শক্তির বোধন! বুধবার (২৫ অক্টোবর) দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ের খড়্গপুর ডিভিশনে মেদিনীপুর থেকে হাওড়াগামী সকাল ৬.২০-র লোকাল চালিয়ে নিয়ে যান দীপান্বিতা। বুধবারের পর বৃহস্পতিবার ও শুক্রবারও তিনি তাঁর দায়িত্ব সামলেছেন সাবলীল ভাবে। জানিয়েছেন, “ভয়ের কিছুই নেই। কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে।”

thebengalpost.net
দীপান্বিতা দাস:

খড়্গপুর ডিভিশন সূত্রে খবর, দক্ষিণ পূর্ব রেলওয়ে শাখায় ইএমইউ লোকাল ট্রেনের প্রথম মহিলা চালক বা প্রথম Motorwomen দীপান্বিতা দাস। এর আগে প্রায় দশ বছরেরও বেশি সময় তিনি মালগাড়ি চালিয়েছেন। তবে, এবার তাঁর দায়িত্ব বাড়ল। হাজার হাজার যাত্রীকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব সামলাবেন তিনি। এজন্য সাধারণ মানুষের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি। দীপান্বিতা জানান, “যাত্রীবাহী ট্রেনে দায়িত্ব অনেক বেশি। দু’মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে। তবে, ভয়ের কিছু নেই। এই শাখায় আমিই প্রথম এই দায়িত্বে এলাম। আরও অনেকেই আসবেন।”

খড়্গপুর শহরের বাড়িতে রয়েছে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া ছেলে এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়ে। স্বামীও রেলেই চাকরি করেন। ট্রেন চালাতে হলেও বাড়ির কাজে ফাঁকি নেই দীপান্বিতার। কাকভোরে ঘুম থেকে উঠে রান্নাবান্না করে সবাইকে খাইয়ে স্নান সেরে নিজে মুখে দেন কিছু। তার পর ব্যাগ কাঁধে দৌড় স্টেশনের দিকে। সঙ্গের টিফিন বাক্সে থাকে দুপুরের খাবার। একটু সময় পেলে কেবিনে বসেই খেয়ে নেন সে সব। এর আগে এক দশক সময় ধরে পণ্যবাহী ট্রেন বা মালগাড়ি চালিয়েছেন। এ বার পদোন্নতি পেয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের চালকের আসনেও বসে গেলেন দুই সন্তানের মা দীপান্বিতা। আর দীপান্বিতা’র আলোক-বর্তিকা ধরেই যে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে শাখায় নারী-শক্তির নতুন জয়গান শুরু হল, তা বলাই বাহুল্য! (ছবি- অর্ণব দাস)