দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, হাওড়া, ৩০ ডিসেম্বর: বঙ্গের প্রথম ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’ (Vande Bharat Express)। ভার্চুয়ালি ফ্ল্যাগ অফ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মাতৃবিয়োগের কারণে সশরীরে পৌঁছতে পারেননি তিনি। শুক্রবার বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ হাওড়া স্টেশন (Howrah Station) থেকে দৌড় শুরু করে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। হাওড়া-এনজেপি (Howrah-New Jalpaiguri) বন্দে ভারত এক্সপ্রেস উদ্বোধনের পর নিজের বক্তৃতায় ‘কবিগুরু’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কন্ঠে শোনা গেল, “ও আমার দেশের মাটি, তোমার পরে ঠেকাই মাথা।” প্রধানমন্ত্রী সংযোজন, “আমাদের রাষ্ট্র ভাবনা হল, দেশের জন্য কাজ করা। দেশকে গড়ে তোলা।” শুক্রবার সকালে মায়ের শেষকৃত্যের পর প্রায় নির্ধারিত সময়েই ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে হাওড়া স্টেশনের কর্মসূচিতে যোগ দেন মোদী।হাওড়া স্টেশনে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল সি.ভি আনন্দ বোস, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেলমন্ত্রী অশ্বিণী বৈষ্ণব সহ বিজেপির সাংসদ, বিধায়ক, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সহ একাধিক নেতা, মন্ত্রীরা।
হাওড়া থেকে যাত্রা শুরু করে শুক্রবার বেলা ১২টা ৩ মিনিটে ডানকুনি স্টেশনে পৌঁছয় বন্দে ভারত। স্টেশনে ট্রেন থামতেই তাতে উঠে পড়েন প্রচুর মানুষ। ঠিক ছিল ওই স্টেশনে ২ মিনিট দাঁড়াবে বন্দে ভারত। তার পরই রওনা দেবে। কিন্তু, অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ২ মিনিট সময় পার হলেও চাকা গড়াতে পারেনি বন্দে ভারতের। যার জেরে নির্ধারিত সময়ের পরও ডানকুনি স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় গতিশীল ট্রেনকে। ১২টা ১৫ মিনিট নাগাদ ডানকুনি স্টেশন থেকে ছাড়ে বন্দে ভারত। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথে প্রথম দিন অর্থাৎ আজ (৩০ ডিসেম্বর) একাধিক স্টেশনে দাঁড়াবে বন্দে ভারত। মোট ১৮টি স্টেশনে দাঁড়বে এই দ্রুততম ট্রেন। রেলের ঘোষিত যে সময়সূচি তাতে বন্দে ভারতের ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে ছেড়ে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছনোর কথা দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে। অর্থাৎ, মোট সময় লাগার কথা সাড়ে সাত ঘণ্টা। কিন্তু, প্রথম দিন লাগবে ১০ ঘণ্টা ১০ মিনিট।
উল্লেখ্য যে, বুধবার বাদে সপ্তাহের অন্য দিনগুলিতে চলবে ট্রেনটি। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ভাড়ার সঙ্গেই খাবারের দামও ধরা থাকবে বলে জানিয়েছিল রেল। রেলের প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, হাওড়া থেকে এনজেপি পর্যন্ত চেয়ার কারে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ভাড়া ১৫৪৩ টাকা। এক্সিকিউটিভ ক্লাসে ভাড়া ২৮০৩ টাকা। পাশাপাশি চেয়ার কারে হাওড়া থেকে বোলপুরের ভাড়া ৬২৮ টাকা। এক্সিকিউটিভ ক্লাসে ১১৫০ টাকা। চেয়ার কারে হাওড়া- মালদহ ভাড়া ৯২৯ টাকা। এক্সিকিউটিভ ক্লাসে ১৭৫৩ টাকা। ইতিমধ্যেই, ভারতীয় রেলের তরফে জানানো হয়েছে, হাওড়া এবং এনজেপি-র মধ্যে তিনটি স্টেশনে থামবে বন্দে ভারত। সেগুলি হল- বোলপুর, মালদহ এবং বিহারের বারসই। এ প্রসঙ্গে এও উল্লেখ্য যে, শুক্রবার ফের মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ঘিরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে, তাল কাটে হাওড়া (Howrah) স্টেশনে। বিজেপি কর্মীদের আচরণের প্রতিবাদ জানান দলেরই সাংসদ (MP) সুভাষ সরকার। তিনি সকলকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান। রেলমন্ত্রী আশ্বিনী বৈষ্ণব নিজে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নেন! কিন্তু, বিজেপি কর্মীদের এহেন আচরণে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। মূল অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও মঞ্চে ওঠেননি তিনি।