দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পূর্ব মেদিনীপুর, ১৬ অক্টোবর: মানিক ভট্টাচার্যের দুই সাগরেদ- বীরভূমের বিভাস চন্দ্র অধিকারী এবং উত্তর ২৪ পরগণার (বারাসতের) তাপস মণ্ডল। এই তাপস মণ্ডলের আদি বাড়ি অবশ্য পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়ার মাইশোরা সংলগ্ন হরেকৃষ্ণপুরে। বর্তমানে, সেখানে থাকেন তাঁর ভাই বিভাষ মণ্ডল ও তাঁর পরিবার। সম্প্রতি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে রাজ্যের যে ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরি খোয়াতে হয়েছে, সেই তালিকায় আছেন বিভাসের (বিভাস মণ্ডল) স্ত্রী পারমিতা মণ্ডল! অবৈধভাবে নম্বর বাড়িয়ে তাঁর চাকরি করে দিয়েছিলেন মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস-ই। শুধু নিজের ভ্রাতৃবধূ-ই নয়, ইতিমধ্যে চাকরি হারানো ২৬৯ জন সহ গত ১০ বছরে আরো কয়েক হাজার ‘অবৈধ’ (বেআইনিভাবে) শিক্ষক নিয়োগেও এই তাপস আর বীরভূমের (নলহাটির) বিভাস অধিকারী’র ‘হাতযশ’ আছে বলে অভিযোগ! উল্লেখ্য যে, শনিবারই মহিষবাথান সহ তাপসের বিভিন্ন ডেরায় হানা দিয়েছিল ইডি। বর্তমানে, তাপস হরিদ্বারে আছেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। তাঁকে ২০ অক্টোবর হাজিরা দিতে বলেছে ইডি (Enforcement Directorate)।

thebengalpost.net
তাপস মণ্ডল :

জানা যায়, হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের তাপস নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় কোচিং সেন্টার খোলেন। তখন থেকেই বাড়ি ছাড়া! বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তিনি গ্রামের বাড়িতে আসতেন না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। শেষ এসেছিলেন গত বছর (২০২১)। স্থানীয়রা এও দাবি করেছেন, প্রতারণার অভিযোগে বাম আমলে একবার গ্রেপ্তার-ও হন তাপস! ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাপসের ব্যবসায়িক পরিধি বাড়তে থাকে। কলকাতার নিউ টাউনে টিচার্স ট্রেনিং সেন্টারের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদে তাপসের পলিটেকনিক কলেজ আছে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও, রাজ্য জুড়ে আছে একাধিক শিক্ষক শিক্ষণ বা টিচার্স ট্রেনিং (বিএড ও ডিএলএড কলেজ) কলেজ। মাইশোরার পাতন্দা গ্রামে তাঁর ভ্রাতৃবধূ পারমিতার নামেও একটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ আছে বলে জানা যায়। কলেজের সভাপতি করে রাখা হয়েছে পারমিতার বাবা অর্থাৎ বিভাস মণ্ডলের শ্বশুর প্রভাকর জানাকে। এদিকে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে পারমিতাকে বেআইনি পথে চাকরি করে দেন তাপস! প্রথমে হাওড়ায় থাকলেও, ২০২০ সালে বদলি হয়ে বাড়ির অদূরেই মাংলই প্রাথমিক বিদ্যালয় আসেন পারমিতা। এ সব কিছুই ভাশুর তাপসের প্রভাবে হয়েছে, তা জানান স্থানীয়রা। তবে, শেষ রক্ষা হয়না! তাঁর চাকরি চলে যায় হাইকোর্টের রায়ে। উল্লেখ্য যে, তাপস মণ্ডল তাঁর ছেলেকে ২০১৯ সালে চাকরি করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ আছে এলাকাবাসীর! এছাড়াও, তাঁর কোচিং সেন্টার থেকেও প্রাথমিকে কয়েক হাজার চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। তদন্তে এই সমস্ত দিকই যে খতিয়ে দেখছেন ইডি ও সিবিআই আধিকারিকরা তা বলাই বাহুল্য!

thebengalpost.net
ইডি’র অভিযান: