দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৪ ডিসেম্বর: পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে হলে খুলতে হবে শাঁখা-পলা! রাজি হননি জলপাইগুড়ির গৃহবধূ মৌমিতা চক্রবর্তী। তাই, রবিবার (১১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত প্রাথমিক টেট (Primary TET 2022) না দিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনার প্রতিবাদে, সারা রাজ্যের সাথে সাথে বুধবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরেও পথে নামলেন বিজেপি মহিলা মোর্চার কর্মী-সমর্থকরা। বুধবার বিকেলে মেদিনীপুর শহরের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিজেপি মহিলা মোর্চার পক্ষ থেকে পথ অবরোধ করা হয় এবং মুখ্যমন্ত্রীকে ধিক্কার জানিয়ে একটি মিছিল করা হয়। নেতৃত্ব দিলেন, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপি মহিলা মোর্চার সাধারণ সম্পাদিকা পারিজাত সেনগুপ্ত, সম্পাদিকা কুহেলি দত্ত প্রমুখ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত রবিবার (১১ ডিসেম্বর) জলপাইগুড়ির সোনাগ্রামের বাসিন্দা মৌমিতা চক্রবর্তীকে শাঁখা-পলা পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। জলপাইগুড়ির দেবনগরের সতীশ লাহিড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রে নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছলেও, এই ঘটনার প্রতিবাদে পরীক্ষা না দিয়েই ফিরে আসেন মৌমিতা। তাঁর মত ছিল, “পর্ষদের নির্দেশ থাকায় সমস্ত গয়না বাড়িতে খুলে রেখে গিয়েছিলাম। হাতে ছিল শুধু শাঁখা আর পলা। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার সময় নিরাপত্তাকর্মীরা আমাকে শাঁখা পলা খুলতে বলেন। কিন্তু, আমাদের পরিবারে বিবাহিত মহিলা শাঁখা-পলা খোলার রীতি নেই। আমি বিয়ের দিন থেকে আজ পর্যন্ত কোনও দিন শাঁখা-পলা খুলিনি। আমি কোনও মতেই শাঁখা-পলা খুলব না বলে জানিয়ে দিই। তখন আমাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন পরীক্ষাকেন্দ্রে থাকা আধিকারিক।” মৌমিতা’র স্বামী জিৎ বিশ্বাস বলেন, “শাঁখা-পলাকে কেউ অলঙ্কার হিসাবে ধরতে পারে এটা ভাবিনি। পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে যখন জানলাম তখন স্ত্রীকে তা খুলে ফেলতে বলেছিলাম। কিন্তু, ও রাজি হয়নি। তবে, অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে আমরা বিবাদে জড়াইনি।” এদিকে, এই ঘটনায় বিজেপি মহিলা মোর্চার বক্তব্য, শাঁখা-পলা হলো বিবাহিত মহিলার সনাতন সংস্কৃতির ঐতিহ্য। এই কাজ করে বিবাহিত মহিলাদের ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে!