দ্য বেঙ্গল পোস্ট প্রতিবেদন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২১ নভেম্বর: “দলের কঠিন সময়ে কিংবা বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন, আগামী ৬ মাস তাঁদের কোনভাবেই দলে যোগদান করানো হবে না! রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে, মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে”। মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারী অনুগামী একঝাঁক বিজেপি নেতার ‘দল’ ছাড়ার জল্পনা তৈরি হতেই, তৃণমূল কংগ্রেসের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা রবিবার এই বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করলেন! শনিবার মেদিনীপুর শহরে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কোর কমিটির বৈঠকের পর এই ‘কঠোর অবস্থান’ ই নেওয়া হয়েছে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সুজয়।

thebengalpost.net
তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক :

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুকুল রায় তৃণমূলে যাওয়ার পরেও, তাঁর অনুগামী একঝাঁক জেলা ও ব্লক স্তরের নেতা বিজেপি’তেই থেকে গিয়েছিলেন! তবে, তাঁদের অবস্থা হয়েছিল অনেকটা ‘দু নৌকায় পা দিয়ে চলা’র মতোই! মন থেকে করতে পারছিলেন না বিজেপি, আবার তৃণমূলেও যোগদান করার উপযুক্ত সময় ও সুযোগ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এই পরিস্থিতিতে গত কয়েকমাস ধরে তাঁরা সক্রিয় রাজনীতি থেকেই দূরে ছিলেন। কিন্তু, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষি আইন প্রত্যাহার করার পর, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মেদিনীপুর জেলা বিজেপি’র সহ-সভাপতি শিবু পানিগ্রাহী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, “এটা ঠিক আমরা সর্বভারতীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুকুল রায়ের হাত ধরেই বিজেপিতে যোগদান করেছিলাম। কিন্তু, সেই দলে যতদিন ছিলাম নিজেদের দায়িত্ব কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করেছি‌। হঠাৎ করেই বিজেপি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিইনি! কিন্তু, দলের একের পর এক ভুল নীতি, সিদ্ধান্ত এবং জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া আমাদের ব্যথিত করেছে। যে কৃষি আইনের সমর্থনে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে গিয়েছিলাম, সেই কৃষি আইন এতদিন পর প্রত্যাহার করে প্রধানমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন সব কিছুই ভুল ছিল। তাই, বিজেপির সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে, এখনই তৃণমূল বা অন্য কোন দলে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিনি।”

thebengalpost.net
জেলা বিজেপি নেতৃত্ব : (ফাইল ফটো)

এদিকে, শিবু পানিগ্রাহী’র এই বক্তব্যের পরদিনই, আজ (রবিবার), মেদিনীপুর জেলা বিজেপি’র তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেওয়া হয়, বিধানসভা নির্বাচনের পরই দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য শিবু পানিগ্রাহী’কে গত আগস্ট মাসে শো-কজ করা হয়েছিল! তবে, উনি তার উত্তর দেননি। বিজেপি সভাপতি সৌমেন তেওয়ারি জানিয়েছেন, “দলে থেকেও ওনার বিরুদ্ধে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ উঠেছিল। তাই, উনি বা ওনার মতো নেতারা যদি দল ত্যাগ করেন, তাতে দলের ভালোই হবে।” যদিও, দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন শিবু পানিগ্রাহী। এমনকি তিনি এও জানিয়েছেন, “শোকজ এর যে চিঠি সংবাদ মাধ্যমে দেখানো হয়েছে, তা নেহাতই নাটক! ওতে আমার ঠিকানা পর্যন্ত ভুল লেখা হয়েছে। আর, আমাকে এই ধরনের কোন চিঠি দেওয়া হয়নি। তবে, এটা ঠিক বিজেপির একাধিক জনবিরোধী নীতির জন্য, মন থেকে আর বিজেপি করতে পারলাম না!”

thebengalpost.net
মুকুল রায়ের সঙ্গে শিবু পানিগ্রাহী (ফাইল ছবি) :